পেশায় মাইক্রোসফটের ইঞ্জিনিয়র। পোস্টিং বেঙ্গালুরুতে। এমনই এক নাম না জানা তরুণ খবরের শিরোনামে। কেন? তিনি জানিয়েছেন, বেঙ্গালুরুতে তাঁর বন্ধু নেই। ছুটির দিন বা শনি রবিবার ঘাড়ের ওপর যেন চেপে বসে একাকিত্ব। তার সঙ্গে যুঝতেই অটো চালান তরুণ।
হ্যাঁ, মাইক্রোসফটে কাজ করে মাসের শেষে ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স ফুলে ফেঁপে উঠলেও একাকিত্ব তাঁর সঙ্গ ছাড়েনা। তাই মানুষের সঙ্গ পেতে অটো চালান তরুণ। ঘটনার সত্যতা কতোটা জানা যায়নি। তবে সম্প্রতি এক এক্স হ্যান্ডেল থেকে অটো চালকের ছবি শেয়ার করা হয়েছে, যার গায়ে চাপানো মাইক্রোসফটের হুডি। ঘটনাটি সামনে আসার পরই নতুন করে একাকিত্ব নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
করোনা পরবর্তী পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থ্যা (WHO) বলছেন, এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় মহামারীর নাম 'একাকীত্ব'। গোটা বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে এই অসুখ। দমবন্ধ হয়ে আসছে একটা গোটা প্রজন্মের৷
সিলিকন ভ্যালির কথা দিয়েই শুরু করা যাক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালতে বিশ্বের তাবড় তাবড় প্রযুক্তিবিদ, উদ্ভাবক, পেশাদারদের বসবাস, আনাগোনা। তাঁদের বেতন, উপার্জন আকাশছোঁয়া। সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের বিন্দুমাত্র অভাব নেই৷ কিন্তু গোটা বিশ্বকে ভার্চুয়াল বাস্তবতায় অভ্যস্ত করে তোলা, ভীষণ 'সফল' ওই মানুষরাও ভুগছেন নিঃসীম একাকীত্বে।
জেন জি, অর্থাৎ যাদের জন্ম ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে, তাদের জীবনে বন্ধুর সংখ্যা বেশ কম। বন্ধুত্ব যদি বা হয়, তাকে ধরে রাখতে সমস্যায় পড়ছেন তাঁরা। একটি সাম্প্রতিক গবেষণা এই তথ্য সামনে এনেছে।
বেশ কয়েক বছর ধরে কলেজ পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেছেন গবেষকরা। দেখা গিয়েছে, কোভিড ১৯ অতিমারী বন্ধুত্ব এবং সামাজিক যোগাযোগের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
করোনা পর্বে ওয়র্ক ফ্রম হোমের চল বেড়েছে, একা একা কাজ করতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষের সঙ্গে মানুষের বন্ধুত্ব।
চাকরি ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বন্ধুত্ব শেষ হচ্ছে ৮২ শতাংশের৷ যাঁরা একসঙ্গে কাজ করেন, তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্বের হার বেশি- ৩৯ শতাংশ। যাঁরা বিচ্ছিন্ন ভাবে আলাদা আলাদা থেকে একই কর্মক্ষেত্রে কাজ করেন, তাঁদের বন্ধুত্বের হার বেশ কম - ২২ শতাংশ।