"থাকব না কো বদ্ধ ঘরে, দেখব এবার জগতটাকে", একঘেয়ে জীবন থেকে সামান্য বিরতি পেলেই মন একেবারে দে ছুট। ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ ছাড়া যায় নাকি? সারা বছর তো একটা ভ্যাকেশনের মুখ চেয়ে বসে থাকা চাতক পাখির মতো।
পাহাড় ভাল লাগে, নাকি সমুদ্র। নাকি জঙ্গল? বছরভর এই তর্ক-বিতর্ক চলতেই থাকে। তবে এখন কিন্তু তার সঙ্গে জুড়েছে আরও এক ঠিকানা, ওয়েলনেস ভ্যাকেশন। সেটা আবার কী? আধুনিক জীবনে মানসিক অবসাদ, কাজের চাপ, পিয়ার প্রেশার, অ্যাঙ্গজাইটি নিত্যসঙ্গী, এসব থেকে রোজকার জীবনে তৈরি হয় কতশত ক্ষত, সে সব সারাতেই দরকার 'সেলফ কেয়ার'। আর সে কারণেই রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ওয়েলনেস ভ্যাকেশন।
'ওয়েলনেস রিট্রিটের' ধারনাটা ঠিক কী? শুধু পাহাড় জঙ্গল বা সমুদ্রের নিস্বর্গ উপভোগ না করে এমন কোথাও ছুটি কাটানো যেখানে রথ দেখা-কলা বেচা দুই-ই হবে। প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটানোও হবে, আবার সেলফ কেয়ারও হবে।
অতিমারী উত্তর পর্বেই ওয়েলনেস নিয়ে ভাবার চল বেড়েছে। যোগাভ্যাস, আয়ুর্বেদ থেরাপির প্রয়োজনীয়তা আমরা বুঝতে শুরু করেছি করোনা পর্বেই।
আমাদের দেশেই কেরালা বেশ কিছু আয়ুর্বেদ ম্যাসাজ সেন্টার রয়েছে। দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সে সব। ঋষিকেশ, হরিদ্বার তো যোগাভ্যাসের জন্য খুবই বিখ্যাত।
একটি আন্তর্জাতিক সমীক্ষা বলছে, ওয়েলনেস পর্যটন ক্রমশ অর্থনৈতিক দিক থেকে ফুলে ফেঁপে উঠছে সারা বিশ্বজুড়েই। শুধু চোখের আরামের চেয়ে মন আর মগজের আরামেই বেশি ঝুঁকছে এই প্রজন্ম।
মুসৌরি, মানালিতে বিলাসবহুল যে কোনও রেসর্টেই থাকছে স্পা, বা আয়ুর্বেদ ম্যাসাজের ব্যবস্থা। প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে যোগাভ্যাস কাজ করে মানসিক ডিটক্সিকেশনের।
এসব শব্দ, এক দশক আগেও অচেনা ঠেকত মধ্যবিত্ত পরিবারে। কিন্তু আধুনিক সময়ে জীবন হয়ে উঠছে জটিল, রোজ একটু একটু করে ক্ষয়ে যাচ্ছি আমরা, সেই ক্ষতয় মলম লাগাচ্ছে নেচারোপ্যাথি। বিলাসবহুল হোটেলে কর্তৃপক্ষ বলছে, ২০ থেকে ৫০, ৬০ সব বয়সের মানুষই আসছেন ওয়েলনেস ভ্যাকেশনে।
বছরে দু'বার ভ্যাকেশনে গেলে অনেকেই অন্তত একবারের জন্য বেছে নিচ্ছেন এই 'মন ভাল করা' ছুটি। ভাল খাবার যেমন দেহের পুষ্টির জন্য জরুরি, তেমনই সুন্দর একটা মনের জন্যেও জরুরি 'ওয়েলনেস' ছুটি। ছুটি মানেই, দিনভর ফুর্তি, লোকেশন বদল, খাওয়া দাওয়া হইহই, এই ধারনা এখন বস্তাপচা। শান্ত, চুপচাপ, ছিমছাম ডেস্টিনেশন বেছে নিচ্ছেন অনেকেই, মনের আরামের জন্য,