সালটা ১৯৭০ । মহালয়ার ভোর (Mahalaya 2023) । ভেসে আসছে মহিষাসুরমর্দিনীর সুর, আগমনীর সুর... আশ্বিনের শারদ প্রাতে, বেজে উঠেছে আলোকমঞ্জির... । রেডিওর সামনে বসে মহালয়া শুনছেন বাড়ির ছোট থেকে বড় প্রত্যেকেই । কাট টু ২০২৩ । টেলিভিশনে চলছে মহালয়া । দুর্গা রূপে অভিনেত্রীদের মহিষাসুরমর্দিনী দেখছেন বাঙালি । কয়েক বছরে কি সত্যিই বদলে গেল মহালয়ার ভোরের ছবি ? সেই গায়ে কাঁটা দেওয়া, চোখে জল এনে দেওয়া দরাজ কণ্ঠের মানুষটাকে ভুলে গেল বাঙালি ? না, বাঙালিকে আত্মবিস্মৃত জাতি বলা হলেও, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রকে(Birendra Krishna Bhadra) কিন্তু ভোলেননি কেউ । তাঁকে ছাড়া মহালয়ার ভোর যে অসম্পূর্ণ । আজও, এতবছর পরেও । বাঙালির দুর্গাপুজো শুরু হয় তাঁর চণ্ডীপাঠ শুনেই ।
বীরেন্দ্রকৃষ্ণের জন্ম ১৯০৫ সালে। তিনি ছিলেন একাধারে বেতার সম্প্রচারক, নাট্যকার, অভিনেতা ও নাট্য পরিচালক। কলম ধরতেন বীরুপাক্ষ নামে। ১৯৩২ এ আকাশবাণীতে প্রথম সম্প্রচারিত হয়েছিল মহিষাসুরমর্দিনী। প্রতিবার লাইভ সম্প্রচারিত হত এই অনুষ্ঠান। শেষবার সম্প্রচারিত হয় ১৯৭২ এ। মহিষাসুরমর্দিনীর রচনা বাণী কুমারের, সংগীত পরিচালনায় ছিলেন পঙ্কজ মল্লিক।
জানা গিয়েছে, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ মহালয়ার আগের দিন রাতে রেডিও স্টেশনে থেকে যেতেন। বাকি শিল্পীরা রাত ২টোর পর একে একে আসতেন। ভোরে অনুষ্ঠান শুরুর আগে স্নান করে গরদের ধুতি এবং পাঞ্জাবি পরে চণ্ডীপাঠে বসতেন তিনি ।
দিন আসে দিন যায়, বয়ে যায় সময়, কিন্তু, মহালয়ার ভোর থেকে মুছে যাননি বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র । মানুষটার গলা না শুনলে মনে হয় মা দুর্গাও বুঝি সবার মতো তাঁর জন্যই অপেক্ষা করেছিলেন ।