কৈশোরের একটা দিন আমাদের জীবনে সবার মনে থাকে। স্কুল জীবনের শেষ দিনটা। আমরা সবাই, প্রায় সবাই ভেবেছিলাম, এই বন্ধুত্ব অটুট থাকবে। ভবিষ্যতে একসঙ্গে থাকার, এক জায়গায় কাজ করার স্বপ্ন দেখেছি আমরা। আপনি দেখেননি? বুকে হাত রেখে বলতে পারবেন? প্রিয় বন্ধু আপনারই সঙ্গে একই অফিসে বা কর্মক্ষেত্রে থাকুক, আপনি চান না? আচ্ছা, আপনি যদি নাও চান, তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশ এখন এমনটাই চাইছে। সাম্প্রতিক সমীক্ষায় তা স্পষ্ট।
এমনিতে খুব প্রচলিত ধারণা আছে একটা। কর্মক্ষেত্রে প্রিয়বন্ধু যদি সহকর্মী হয়, তাহলে বন্ধুর সঙ্গে পেশাগত নানা জটিলতা তৈরি হয়ে সম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে। কিন্তু এই প্রজন্ম নাকি সেভাবে ভাবছেই না। বরং প্রাণের বন্ধুকেই কর্মক্ষেত্রে পাশে চাইছে।
এই প্রবণতা কবে থেকে বাড়ল? অবশ্যই অতিমারীর সময় থেকে। প্যানডেমিক, আমাদের আশপাশটা, আমাদের দেখার ধরণটা অনেক বদলে দিয়েছে। পেশাগত প্রতিদ্বন্দ্বিতার থেকে ক্রমশ বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে সহকর্মীর সঙ্গে বন্ধুত্বপুর্ণ সম্পর্ক।
তরুণ প্রজন্মের মত,
বেস্ট ফ্রেন্ড যদি একই টিমে কাজ করে, তাহলে অনেক কম সময়ে, কাজ সম্পন্ন করা যায়। এছাড়া পুরো কাজ মজা করে করা যায়। বন্ধু সহকর্মী হলে তাঁর সঙ্গে বোঝাপড়া ভাল হয়। তাছাড়া, কর্মক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার পরিবেশ কম থাকে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, নিরাপত্তা বোধ বাড়ে।
এছাড়া কর্মক্ষেত্রে আমাদের সারাদিনের অনেকটা সময় কাটে, কাজের বাইড়েও পারিবারিক নানা সমস্যা, অন্যান্য সমস্যা নিয়ে আমরা আলোচনা করে থাকি। সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্ক যত বেশি ফর্মাল হবে, ততওই জাজড হওয়ার ভয় থাকে। অন্যদিকে প্রিয় বন্ধু এমন কেউই হয়, যার সঙ্গে কথা বলার সময় জাজড হওয়ার আশঙ্কাই থাকে না। তাই জীবনের নানা সমস্যা নিয়ে খোলামেলা কথা বলাও সহজ হয়।
এছাড়া, কর্মক্ষেত্রে প্রিয়বন্ধু থাকলে কাজের নানা অনিশ্চয়তা, বা সংকট, বা কাজের ধরনে নতুন কোনও বদল এলেও খাপ খাইয়ে নিতে সুবিধে হয়। আসলে, সারাজীবন মানুষ এমন কাউকেই খোঁজে, যে তাঁর দলে, শেষ দিন পর্যন্ত তারই দলে।