এমন কঠিন সময়ে দিনগুলোতে আলো পড়তে চায়না। টিভিতে, খবরের কাগজে, খাবার টেবিল জুড়ে শুধু ভয়ের খবর। এসবের মধ্যেই কালের নিয়মে চলে এল নতুন বছর। আস্ত আনকোরা একটা বছর। উৎসব-উদযাপনের বহর গত বছরের মতো এ'বছরেও কম। অতিমারীতে কেউ স্বজন হারিয়েছেন, কারোর প্রিয়জন পরবাসে। ভিডিও কলে সকাল বিকেল শুধু ভাগ করে নেওয়া আশঙ্কা, অবসাদ, দুশ্চিন্তা। একই অন্ধকার ছেয়ে রেখেছে গোটা বিশ্বকেই।
এরই মধ্যে আজ সকালের সূর্যটাকে নতুন লাগে। একুশের শেষ সূর্যাস্ত দেখে মন বিষণ্ণ হয়েছে অনেকেরই। বছর ফুরনোর অভিজ্ঞতা যেন বাড়ি বদলের স্মৃতি উসকে দেয়। বছরভরের কিছু ব্যথা কিছু ক্ষত পিছু ছাড়তে চায় না। আর বছরজুড়ে জড়ো করা সুন্দর মুহূর্তগুলো, সেগুলোও চলে যাবে ক্যালেন্ডারের তারিখের সাথে সাথে? তা কখনও হয়?
একুশের যা কিছু সুন্দর, সব থেকে যাক বাইশেও। আজ কারোর ঘরে উদযাপন, কারোর ঘরে নয়, কারোর অফিস বন্ধ। কারো আবার সেই কবে থেকেই পাকাপাকি বন্ধ। নতুন বছর সবার ঘরে আলো ফেলুক।
নতুন বছরে নতুন সূর্য তো ওঠে না আসলে। নতুন ভেবে নিয়ে একটু যত্ন করতে হয়। এই বছরে সবার জন্য একটু যত্ন থাক, একটু লেগে লেগে থাকা, বেঁধে বেঁধে থাকা থাক। আর ফেলে আসা বছরের যা কিছু সঞ্চয়, সব দিয়ে এ বছরটাকে সাজিয়ে রাখা থাক।
মৃত্যুখাদের ধার দিয়ে হাঁটতে হাঁটতেও মানুষ জীবনের উদযাপন করে তাহলে? করে তো, করছে তো, করবেও যে যার মতো করে। বেঁচে থাকাটাই তো উদযাপন। নতুন জামার মতো ভাঁজ না ফেলে, টানটান করে কত যত্ন-ভালোবাসায় ভরিয়ে রাখতে চায় মানুষ আগামীর দিনগুলো। সেই চাওয়া কি ব্যর্থ হয় কখনও? সবার জন্য ভাল দিন আসেই, একদিন না একদিন।