মাদার টেরেসা বলেছিলেন, হোয়্যাট ক্যানন ইউ ডু টু প্রোমোট ওয়ার্ল্ড পিস ? গো হোম অ্যান্ড লাভ ইউর ফ্যামিলি ...। পরিবার (Family) । এই একটা শব্দেই লুকিয়ে আছে অনেকগুলি অর্থ । ভালবাসা, শাসন, আশ্রয়, ভরসা, সর্বোপরি একতা । জীবনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা, মনের কথা উজার করে দেওয়া কিংবা অসফলতায় বা কঠিন সময়ে পাশে থাকা শক্ত পিলারের নামই পরিবার । পরিবারের অর্থ কিন্তু শুধু স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি কিংবা দাদু, ঠাকুমা, জেঠু, জেঠিমা সকলকে নিয়ে জয়েন্ট ফ্যামিলিতে সীমাবদ্ধ নেই । পরিবার হতে পারে দুই বন্ধুর, পরিবার হতে পারে আপনার অফিস কিংবা কাজের জায়গা, কারও কাছে আবার পরিবার বলতে গাছপালা, পশু-পাখি । একটা বৃদ্ধাশ্রমও কিন্তু পরিবারের মতোই । সুখ-দুঃখে পাশে থাকার নামই আসলে পরিবার । আজকের দিনটা কিন্তু পুরোটাই পরিবারের জন্য । ১৫ মে, বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে 'আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস' । পরিবারের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে প্রতি বছর আজকের দিনটি পালন করা হয় ।
পরিবারের জন্য এই একটা দিন বরাদ্দ করে রাখা সেই ১৯৯৪ সাল থেকে । আজ ২০২৪ । এবার আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস-এর ৩০-তম বার্ষিকী উদযাপন । প্রতি বছরই নতুন থিম থাকে । বছর-বছর দারিদ্র্য, ক্ষুধা, উদ্বাস্তু সমস্যার মতো দিকগুলির উপরে আলো ফেলা হয়েছে পরিবার দিবসে। চলতি বছরের থিম হল, 'ফ্যামিলিস অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ' । থিমের লক্ষ্যই হল পরিবারের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা । অর্থাৎ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব যতটা সম্ভব কমিয়ে আনতে পরিবারগুলিকে আরও সচেতন করা প্রয়োজন । শিক্ষা, তত্ত্ব, পরিসংখ্যা ও কমিউনিটির সকলের উদ্যোগ জলবায়ু নিয়ে উদ্বেগ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
ইতিহাস
গত দু’দশক ধরে আন্তর্জাতিক পরিবেশ দিবসের উদ্যাপন করছে রাষ্ট্রপুঞ্জ । ১৯৮৩ সালে ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কাউন্সিল অ্যান্ড দ্য কমিশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট পারিবারিক সমস্যাগুলিতে মনোযোগ দেওয়ার সুপারিশ করেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জে । এরপরই ১৯৯৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে ১৫ মে দিনটাকে বিশ্ব পরিবার দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৯৪ সাল থেকে দিনটা পালন হয়ে আসছে বিশ্বজুড়ে ।
পরিবার দিবসের গুরুত্ব
পরিবার মানে একতা । জীবনের কঠিন সময় শক্ত করে আপনার হাতটা ধরবে এই পরিবারই ।
আপনার সবথেকে বড় সমালোচক পরিবারের মানুষগুলি । কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল, কোনটা করা উচিৎ, আর কোনটা করা উচিৎ নয়, সবসময় তাঁরা পরামর্শ দেন । ভুল করলে, সেই ভুলটাও ধরিয়ে দেন । বাস্তবের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন ।
ভাল হোক বা খারাপ, সব পরিস্থিতিতেই পাশে থাকে পরিবার । ভাল সময় যেমন আপনার সঙ্গে উদযাপন করবে, তেমনই খারাপ সময়ে লড়াই করার শক্তি দেবেন সেই মানুষগুলো ।
আমাদের সবথেকে বড় শুভাকাঙ্খী হল আমাদের পরিবার । জীবনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা । আমরা যাতে সবসময় ভাল থাকি, সবসময় সেটাই চান তাঁরা ।
কীভাবে পালন করবেন আজকের দিনটা ?
পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান । গানে গানে, খাওয়া-দাওয়ায় মেতে উঠুন । বাবা-মা-কে সময় দিন, পরিবারকে সময় দিন । ফ্যামিলি গার্ডেন তৈরি করুন । ফুলে ফুলে সাজান বাগান । এতে মনের সৌন্দর্য্য বাড়বে । স্পেশ্যাল দিনে স্পেশ্যাল রান্না করতে পারেন একসঙ্গে । কিংবা পরিবারকে নিয়ে মুভি নাইটে যেতে পারেন, কিংবা ফ্যামিলি ডিনারে অথবা বেরিয়ে যেতে পারেন অজানা কোনও উদ্দেশে । প্রতিদিনের ব্যস্ত সময়ে হয়তো পরিবারকে সময় দেওয়া হয়ে ওঠে না । তাই, ফ্য়ামিলির জন্য আজকের দিনটাই বেস্ট ।
পরিবেশ রক্ষাতেও কাজ করুন । গাছ লাগান । বিশ্ব উষ্ণায়ন কমাতে সাহায্য করুন । সমাজের জন্য পরিবারের সকলে মিলে উন্নয়নমূলক কাজ করুন । একে অপরের পাশে থাকাটাই পরিবারের আসল সংজ্ঞা । বেঁধে বেঁধে থাকুক সব সম্পর্ক, পরিবারের প্রত্যেকের মধ্যে আরও বাড়ুক ভালবাসা । এডিটরজি বাংলার তরফে সকলকে আন্তর্জাতিক পরিবার দিবসের শুভেচ্ছা ।