সময় বদলে গিয়েছে। সেই দিনকাল আর নেই। যখন, এক টাকা বা দু’টাকার গ্রিটিংস (Greetings card) কিনে একজোট করে প্রিয় বন্ধুর নাম লিখে ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ (Happy new year) লিখে পাঠানো যেত। দোকানে থরে থরে সাজানো থাকত সেইসব গ্রিটিংস কার্ড। ছিল আর্চিস গ্যালারি। ‘ভালবাসা মানে আর্চিস গ্যালারি’ গেয়ে আমবাঙালির হৃদয় জিতে নিয়েছিল বাংলা ব্যান্ড পরশপাথর।
অজস্র ইংরেজি কোটেশনে ভরা, অসংখ্য রংবেরঙের ফুল ও ছোটখাট ভুলে ভরা সেই গ্রিটিংসের দিন গিয়াছে! প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে ঝগড়া হওয়ার পর কথা বন্ধ থাকলে তার দেওয়া গ্রিটিংস কার্ড খুলে মন ভাল করার উপায়ও নেই আর। এখন পুরোটাই ডিজিটাল।
নববর্ষ এবং নবহর্ষ- দুইয়ের বার্তাই এখন আসে হোয়াটসঅ্যাপে। অথবা, মেসেঞ্জারে। আরও নানাবিধ উপায় আছে বটে। যা নেই তা হল, ওই কাগজ, কার্ডবোর্ড, রঙিন পেনসিল আর অতি ঝকমকে মন নিয়ে বসে নতুন গ্রিটিংস লেখার ইচ্ছেগুলো।
গত বছরের মতোই এই বছরটিও শেষ হচ্ছে অতিমারির (Pandemic) আতঙ্ককে ঘাড়ে নিয়েই। তার মধ্যে কোনও অসুস্থ মানুষকে ‘গেট ওয়েল সুন’ গ্রিটিংস কার্ডে লিখে পাঠালে তার মুখটি যে হাসিতে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে, সেই হাসির আলো নিয়েই পথচলা শুরু করুক না হয় নতুন বছরটি।
পুরনো দিন ফেরে না, ফুরনো দিনও ফেরে না আর। তবু, স্মৃতি ফিরে আসে বারবার। পশ্চিমবঙ্গ সরকার পড়ুয়াদের হাতে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে গ্রিটিংস কার্ড তুলে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে ইতিমধ্যেই। এখনকার টিনএজারদের কাছে এ এক নতুন অভিজ্ঞতা তো বটেই, তার সঙ্গেই, তাদের ত্রিশ বা চল্লিশোর্ধ্ব অভিভাবকদের মুখে নস্টালজিয়ার আলতো হাসি ফুটিয়ে তোলার একটি উপায়ও।
এই হাহাকার পড়া বছরের শেষবেলায় ওটুকুও তো পাওনা!