ফ্র্যাঙ্কি জানেই না ও ফ্র্যাঙ্কি! মানে? মানে এটাই! ফ্র্যাঙ্কি জানে না, যে ওর নাম ফ্র্যাঙ্কি। কী করে হয়? যার বয়স মাত্র ৮ দিন, সে কী নিজের নাম জানে?
ফ্র্যাঙ্কি না জানলে আপনিও জানবেন না? ২০২৫ সালে ভারতে যে শিশুটি প্রথম জন্ম নিল, ওরই নাম দেওয়া হয়েছে ফ্র্যাঙ্কি! মিজোরামের রাজধানী আইজলের সিনড হাসপাতালে ১ জানুয়ারি রাত ১২ টা বেজে ৩ মিনিটে পৃথিবীর আলো দেখেছে ফ্র্যাঙ্কি!
১ জানুয়ারি, ২০২৫ থেকে নতুন প্রজন্ম জেনারেশন বিটা (Generation Beta) শুরু হয়েছে। দেশের প্রথম জেন বিটা শিশু ফ্র্যাঙ্কি! আর গোটা পৃথিবীর প্রথম জেন বিটা শিশু হল অস্ট্রেলিয়ার রেমি।
জেনারেশন বিটা কারা? ২০২৫ থেকে ২০৩৯ সাল পর্যন্ত যারা জন্মাবে, সকলেই বিটা প্রজন্মের হবে। ১৫ বছর অন্তর অন্তর জনারেশন পালটায়। বিটার আগের পনের বছর ছিল, জেনারেশন আলফা। তার আগে ছিল জেন জি, তারও আগে জেন ওয়াই।
বিশ্বের নিরিখে ফ্র্যাঙ্কি জেনারেশন বিটা (Generation Beta)-য় জন্মানো দ্বিতীয় শিশু। প্রথম হিসেবে ধরা হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ায় জন্মানো শিশু রেমিকে। নিউ সাউথ ওয়েলসের কমবোইনে জে-লিং হুয়াং এবং লিয়াম ওয়ালশ নামের দম্পতির সন্তান সে। নির্ধারিত সময়ের ২ সপ্তাহ আগেই রেমি জন্ম নিয়েছে।
প্রত্যেকটা প্রজন্মের কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে গোটা বিশ্বজুড়ে। একবার জেনে নেওয়া যাক সেসব।
জেন বিটা (২০২৫-২০৩৯)
কোভিড পরবর্তী দুনিয়ায় জন্ম। অতিমারীর শুধু গল্প শুনবে এরা। তাছাড়া এটা এমন একটা প্রজন্ম, যারা জন্ম থেকেই প্রযুক্তি বিশেষ করে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সঙ্গেই বড় হবে।
জেন আলফা (২০১০-২০২৪)
সোশ্যাল মিডিয়া যখন রাজ করছে গোটা পৃথিবীতে, সেই সময়ে জেনারেশন আলফার জন্ম। ২০২৫ পড়ার আগে পর্যন্ত এরা ছিল পৃথিবীর নবতম প্রজন্ম।
জেন জি (১৯৯৭-২০১২)
এই প্রজন্ম প্রথম প্রযুক্তি-ইন্টারনেট-সোশ্যাল মিডিয়র বিপুল ব্যবহার করে বড় হয়েছে। জেন জি-কে জুমারস ও বলা হয়। সাইবার বুলিং বা ইন্টারনেটের নানা রকমের প্রভাব এদের ওপর পড়েছে। ক্লাইমেট চেঞ্জের বিপুল প্রভাব দেখেছে এরা জন্মের কয়েক বছরের মধ্যে।
জেন ওয়াই (১৯৮১-১৯৯৬)
এদের মিলেনিয়ালস ও বলা হয়। মিলেনিয়ালস রা পৃথিবীর বেশ কিছু বড় বড় অর্থনৈতিক রিসশন প্রত্যক্ষ করেছে, ২০০০-এর গ্রেট রিসেশন এবং কোভিডকালীন রিসেশন।
জেন এক্স (১৯৬৫-১৯৮০)
এই জেনারেশন পপ সংস্কৃতি দেখল, এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায় নিয়েও প্রথম কথা বলছে এই প্রজন্ম। জেন এক্স সেই অর্থে বলতে গেলে আগের প্রজন্ম বেবি বুমার্স এবং জেন ওয়াই-এর মধ্যে একটা সেতু।
বেবি বুমারস (১৯৪৬-১৯৬৪)
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্ম। সাইলেন্ট জেনারেশনে, সারা পৃথিবীর জনসংখ্যা অনেকটা কমে গিয়েছিল, ঠিক পরের প্রজন্মে সেই পরিস্থিতি ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যায়। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে আমেরিকা-ইওরোপে জনবিস্ফোরণ ঘটেছিল। সেখান থকেই 'বুম' শব্দটা এসেছে।
সাইলেন্ট জেনারেশন্স (১৯২৮-১৯৪৫)
এই প্রজন্ম দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ দেখেছে, অর্থনৈতিক মন্দা দেখেছে। পৃথিবীর ইতিহাসে গ্রেট ডিপ্রেশন নামে পরিচিত যে রিসেশন, তা সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছে এই প্রজন্ম। চূড়ান্ত অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে এই প্রজন্ম। স্বভাবতই, এই সময়ে ফ্যামিলি প্ল্যানিং এর কথা ভাবেননি, জনসংখ্যার একটা বড় অংশ।
গ্রেটেস্ট জেনারেশন ( ১৯০১-১৯২৭)
এই জেনারেশন গ্রেট ডিপ্রেশন দেখেছে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ দেখেছে। গোটা দুনিয়ায় জ্যাজ মিউজিক জনপ্রিয় করেছে এরাই। এই প্রজন্মের বড় অংশ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল সৈনিক হিসেবে।