Chhat Puja 2024: মহাভারতের যুগ থেকেই হয়ে আসছে ছট পুজো, দ্রৌপদীও ছিলেন 'ছট মাইয়া'র উপাসক

Updated : Nov 05, 2024 13:31
|
Editorji News Desk

বাঙালির উৎসবের মরশুম শেষ হয়ে আসছে। চারপাশে বিষণ্ণতা। এর মাঝেই শেষ গানের রেশ নিয়ে চলে এল ছট পুজো। বিহারের মানুষ, প্রথম এই পুজো শুরু করেছিলেন। ছট মানে ছট মাইয়া, সূর্যের আরেক নাম। সূর্যকেই চার দিন ধরে পুজো করা হয় ছট পুজোয়।

কার্ত্তিক মাসের অমাবস্যার পর চতুর্থীর দিন মহিলারা একবার খেয়ে ১২ ঘণ্টা উপবাসে থাকেন। তারপর খাবার খেয়ে পঞ্চমীতে ২৪ ঘণ্টা উপবাসে থাকেন, তারপর আবার খাবার খেয়ে ৩৬ ঘণ্টা নির্জলা উপোস করে জলাশয় অথবা নদীতে গিয়ে আবক্ষ জলে দাঁড়িয়ে সূর্য দেবতার কাছে নিজের মনের বাসনা জানান। ছট পুজোর কোনও মন্ত্র নেই। যার যে ভাষায় সূর্যের কাছে মনবাসনা জানানোর ইচ্ছে, তিনি সে ভাষাতেই বলবেন মনে মনে। মন্ত্র নেই, অর্থাৎ ছট পুজোয় পুরোহিতেরও কোনও প্রয়োজন হয়না। 

চারদিনের ব্রতের প্রথম দিনে বাড়ি-ঘর পরিষ্কার করে স্নান সেরে শুদ্ধাচারে নিরামিষ খাওয়ার রেওয়াজ। একে "নহায়-খায়" বলে, পরদিন থেকে শুরু হয় উপোস। ব্রতীরা দিনভর নির্জলা উপবাস করে সন্ধ্যা পুজো শেষ করে ক্ষীরের খাবার খান, একে "খরনা" বলে। তৃতীয় দিনে সূর্যাস্তের সময় কোনও নদী বা জলাশয়ের ঘাটে গিয়ে অন্যান্য ব্রতীদের সঙ্গে অস্তগামী সূর্যকে দুধ অর্পণ করেন ব্রতীরা, এই আচারকে "সন্ধ্যা অর্ঘ্য" বলে। শেষদিন সূর্যোদয়ের সময়ে ঘাটে গিয়ে সূর্যকে ফের দুধ দান করে উপোস ভাঙা হয়। এই আচারের নাম "ঊষা অর্ঘ্য"।

হিন্দু শাস্ত্র বিশেষজ্ঞরা বলেন, ছট পুজোই একমাত্র ধর্মীয় উত্‍সব, যা বৈদিক যুগ থেকে চলে আসছে। সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত কালে সূর্যের আরাধনার উল্লেখ রয়েছে ঋগ্বেদে।  ঋষিরা নাকি সূর্যের আলো থেকে শক্তি লাভের জন্য সরাসরি সূর্যের আলোতে নিজেদের উন্মুক্ত করে ছটপুজো করতেন। 

ছট পুজো ঘিরে প্রচলিত বিশ্বাস, রাবণ বধের পর সীতাকে নিয়ে অযোধ্যায় ফিরেছিলেন রাম। যুদ্ধে তো জয় হলো, কিন্তু রাবণ বধের পাপ থেকে মুক্তি পেতে মুনি ঋষিরা রামকে রাজসূয় যজ্ঞ করার পরামর্শ দেন। কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথি থেকে শুরু করে ছয় দিন ধরে মুদগল ঋষির আশ্রমে থেকেই ছট পালন করেন সীতা।

মহাভারতে, যখন পাণ্ডবরা নির্বাসনে ছিলেন, দ্রৌপদী সাহায্যের জন্য ধৌম্য ঋষির কাছে গেলে ঋষি দ্রৌপদীকে উপোস করে সূর্যের কাছে প্রার্থনা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন, অর্থাৎ মহাভারতেও পাওয়া গেল ছটের উল্লেখ। 

আবার মহাভারতেই উল্লেখ রয়েছে, কর্ণ তাঁর পিতা সূর্যের (সূর্য) জন্য একটি পুজোপাঠের আয়োজন করেছিলেন। এও কথিত আছে, সূর্যদেবের আশীর্বাদে তিনি নাকি অঙ্গদেশ, বর্তমানে বিহারের ভাগলপুর শাসন করেছিলেন।

জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের আবার অন্য একটি ব্যখ্যা রয়েছে ছট পুজোকে নিয়ে। কার্তিক মাসের এই সময়ে সূর্যের অবস্থানের কারণে ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় পৃথিবীতে আসে। সরাসরি যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে পেট ও ত্বকে সরাসরি প্রভাব ফেলে। ছট উৎসবে সূর্য দেবের প্রতি অর্ঘ্য নিবেদনের মাধ্যমে আরোগ্য কামনা করা হয়। 

শুরুটা বিহারি সম্প্রদায় দিয়ে হলেও এখন কিন্তু ছট পুজো উদযাপন শুধু বিহারি সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। সারা দেশের বিভিন্ন সম্প্রদায় এবং ধর্মের মানুষ এখন এই উৎসবকে আপন করে নিয়েছেন। বিহার, ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় ধুমধাম করে পালিত হয় এই উৎসব। এর পাশাপাশি, উত্তরপ্রদেশের একটি বড় অংশেও এই পুজোর প্রচলন রয়েছে। ভারতের বাইরে নেপালের কিছু অংশেও এই উৎসব পালন করতে দেখা যায়। 

Chhat Puja

Recommended For You

editorji | লাইফস্টাইল

ঘটা করে আলাদা দিন, অথচ ছক ভাঙলেই প্রশ্নের মুখে মায়েরা! মাতৃদিবসের কড়া সত্যি এটাই

editorji | লাইফস্টাইল

Digha Jagannath Temple: পুরীর জগন্নাথ মন্দিরেই চৈতন্য দেবকে খুন করা হয়েছিল? জেনে নিন রোমহর্ষক কাহিনী

editorji | লাইফস্টাইল

Jagannath: জগন্নাথই কৃষ্ণ, আবার তিনি আদিবাসীদেরও দেবতা! রইল নানা অজানা তথ্য

editorji | লাইফস্টাইল

Darjeeling Day tour: এক দুপুরে দার্জিলিং...বৈশাখের দাপটে পাহাড়ের রানি যেন একটুকরো স্বর্গ

editorji | লাইফস্টাইল

Offbeat Tabakoshi: মিরিকের কাছেই চা বাগানে ঘেরা তাবাকোশি যেন এক টুকরো স্বর্গ