সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করতে হবে । তরুণ প্রজন্মকে সেই পরামর্শ দিয়ে সম্প্রতি বিতর্কের মুখে পড়েন ইনফোসিস কর্তা এন আর নারায়ণ মূর্তি। তাঁর কথায়, ৭০ ঘণ্টা কাজ করলেই উন্নততর দেশগুলোর সঙ্গে পাল্লা দেওয়া সম্ভব। তাঁর এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে কম সমালোচনা হয়নি । এত ঘণ্টা কাজ যে তরুণ প্রজন্মের শারীরিক-মানসিক ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে, সেই নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে । কিন্তু, চিকিৎসকরা কী বলছেন ? সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ কি আদৌ করা উচিৎ । আর শরীরের উপরই বা কত প্রভাব পড়বে তার ?
চিকিৎসকরা মনে করেন, পরিশ্রম করা শরীরের জন্য ভাল । প্রত্যেকেরই কঠোর পরিশ্রম করা উচিৎ । তবে, সেইসঙ্গে জীবনে একটা ভারসাম্যও থাকতে হবে । এই যেমন সঠিক সময়ে খাও, পুষ্টিকর খাওয়া, পর্যাপ্ত ঘুম... ৭০ ঘণ্টা কাজের সঙ্গে এগুলোও প্রয়োজন । এগুলো ব্যালান্স থাকলেই আপনি দারুণ কাজ উপহার দিতে পারবেন । উৎপাদনশীলতা বাড়বে ।
হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অ্যাপোলো-র সিনিয়র কনসালট্যান্ট সুরঞ্জিত চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কঠোর পরিশ্রম মানেই যে আপনি আপনার স্বাস্থ্যকে অবহেলা করবেন, তা কিন্তু নয় । শুধু উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকলে চলবে না, স্বাস্থ্যের যত্নও নিতে হবে । এই যেমন সপ্তাহে প্রায় ৬০ ঘণ্টা কাজ করা, প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা, ৭-৮ ঘণ্টা পর্যাপ্ত ঘুমানো এবং সমস্ত প্রয়োজনীয় পুষ্টি সহ সুষম খাবারও প্রয়োজন শরীরের জন্য ।
সুস্থ জীবনের জন্য ৫ মন্ত্র
সুষম খাদ্য : ফল, শাকসবজি, চর্বিহীন প্রোটিন রয়েছে এমন খাবারা খেতে হবে । এছাড়া,প্রক্রিয়াজাত, শর্করা জাতীয় খাবার ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট এড়িয়ে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।
নিয়মিত ব্যায়াম: ফিটনেস বজায় রাখতে, ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে এবং সামগ্রিক সুস্থতার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা প্রয়োজন । প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিটের কাছাকাছি শরীরচর্চা করার চেষ্টা করুন ।
পর্যাপ্ত ঘুম: আপনার শরীর ও মনকে বিশ্রাম দেওয়ার জন্য ও নতুন উদ্দীপনায় নতুন দিন শুরু করার জন্য প্রতি রাতে ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন । মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট: স্ট্রেস অর্থাৎ মানসিক চাপ কমানোর জন্য উপায় যেমন ধ্যান, যোগব্যায়াম । স্ট্রেস আপনার শরীরের ক্ষতি করতে পারে
ক্ষতিকারক অভ্যাস এড়ানো: ধূমপান, অত্যধিক অ্যালকোহল সেবন এবং ড্রাগ ব্যবহারের থেকে দূরে থাকুন । এই অভ্যাসগুলি আপনার স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।