বাঙালির অন্যতম উৎসব দুর্গাপুজো। একই রকমভাবে অবাঙালিদের কাছে অন্যতম বড় উৎসব নবরাত্রি। দেবীপক্ষের প্রথম দিন থেকে শুরু হয়ে যায় নবরাত্রি। প্রত্যেক দিন দেবীর এক একটি রূপের পুজো করা হয়। বাংলায় এই নয় রূপকে একসঙ্গে বলা হয় নবদুর্গা।
বসন্তকালে হয় বাসন্তী পুজো। সেটি বাংলার বাইরে প্রধান দুর্গোৎসব। কিন্তু কৃত্তিবাসী রামায়ণ মতে শারদীয়ায় রাবণ বধের জন্য মা দুর্গার আরাধনা করেছিলেন শ্রীরামচন্দ্র। সেই থেকেই বাংলায় শারদীয় উৎসব হয়। একে তাই দেশে শারদীয় নবরাত্রি বলে। কিন্তু এই নটি দুর্গা কারা! চলুন জেনে নেওয়া যাক।
প্রথমং শৈলপুত্রীতি দ্বিতীয়ং ব্রহ্মচারিণী ।
তৃতীয়ং চন্দ্রঘন্টেতি কুষ্মান্ডেতি চতুর্থকম্ ।। ৩
পঞ্চমং স্কন্দমাতেতি ষষ্ঠং কাত্যায়নীতি তথা ।
সপ্তমং কালরাত্রীতি মহাগৌরীতি চাষ্টমম্ ।। ৪
নবমং সিদ্ধিদাত্রী চ নবদুর্গাঃ প্রকীর্তিতাঃ ।
উক্তান্যেতানি নামানি ব্রহ্মণৈব মহাত্মনা ।। ৫
শৈলপুত্রী, ব্রহ্মচারিনী, চন্দ্রঘণ্টা, কুষ্মান্ডা, স্কন্দমাতা, কাত্যায়নী, কালরাত্রি, মহাগৌরী, সিদ্ধিদাত্রী। এরাই নবদুর্গা রূপে পূজিত হন। প্রাচীন দুর্গা আরাধনায় নটি উদ্ভিদকে দেবী রূপে পুজো করা হত। প্রথম রাতে পুজো হয় দেবী শৈলপুত্রীর। দ্বিতীয় রাতে ব্রহ্মচারিনীর আরাধনা হয়। এইভাবে মহানবমী পর্যন্ত প্রত্যেকদিন নয় দেবীর আরাধনা করা হয়।
শ্রী শ্রী চণ্ডী-তে মা দুর্গার বিভিন্ন আখ্যান পাওয়া যায়। নয় দেবী, দুর্গারই নয় রূপ। কুর্মপুরাণে উল্লেখ আছে দেবীর প্রথম রূপ শৈলপুত্রী। হিমালয়ের কন্যা বলেই এই নাম দেবীর। মহাদেবের আগে বিয়ের আগে তপস্যা করেছিলেন পার্বতী। সেই রূপের নাম ব্রহ্মচারিনী। দেবীর মুখ চাঁদের মতো উজ্জ্বল। তাই আরেক নাম চন্দ্রঘণ্টা। দেবীর হাসি ও হাতের রক্তপাত্র থেকে জগৎ সৃষ্টি করেছেন। দেবী কুষ্মান্ডা অনেকটা চামুন্ডার রূপ। কার্তিকের আরেক নাম স্কন্দ। কার্তিকের মা, তাই দেবী স্কন্দমাতা। কাত্যায়নী মুনি কন্যাসন্তান চাওয়ায়, দেবীর জন্ম হয়। তাই দেবীর আরেক নাম কাত্যায়নী। কালের নাশিকা দেবী কালরাত্রি। ভয়ঙ্কর এই দেবীর গায়ের রং নিকষ কালো। কালিকা হিসেবেই পুজো হন দেবী কালরাত্রি। মহাদেবের জন্য কঠোর তপস্যা করেন পার্বতী। তখন রোদে পুড়ে তাঁর দেহ কৃষ্ণবর্ণ হয়ে যায়। দেবীর নবম রূপ এই মহাগৌরী।