জগন্নাথ দেবের প্রাণপ্রতিষ্ঠার আর মাত্র দু'দিন বাকি। আগামী ৩০ এপ্রিল, অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে জগন্নাথ, বলরাম এবং শুভদ্রার প্রাণপ্রতিষ্ঠা হবে। কেমন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি? চলুন দেখে নেওয়া যাক। নিউ দিঘা স্টেশন থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে এই মন্দিরটি। স্টেশন থেকে মাত্র ১০-১২ মিনিটের হাঁটা পথ, টোটো বা গাড়িতে ৫ মিনিটে পৌঁছে যাওয়া যায় মন্দিরে। প্রায় ২০ একর জমির উপর বিস্তৃত এই মন্দির। আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর সাথে ওড়িশার পুরীর ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ মন্দিরের অনুকরণে গড়া এই মন্দিরের উচ্চতা প্রায় ২০-২৫ ফুট।
মন্দিরে রয়েছে মোট ৪টি প্রবেশপথ।পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ চার দিক থেকেই প্রবেশ করা যাবে। তবে মূল প্রবেশপথটি পূর্ব দিকে, যা সমুদ্রের দিকে। প্রতিটি দরজার সঙ্গে তৈরি হয়েছে সিঁড়ি ও ছাউনি, যাতে দর্শনার্থীরা রোদ বা বৃষ্টিতে ভিজে না যান। প্রতিটি দরজার উপরে রয়েছে শঙ্খ, চক্র ও পদ্মের অলংকরণ। মূল ফটক দিয়ে ঢোকার পর, প্রথমেই পড়বে অরুণ স্তম্ভ। অরুণ স্তম্ভের ঠিক পরেই রয়েছে সিংহদুয়ার। সিংহ দুয়ারের ঠিক উল্টোদিকে ব্য়াঘ্র-দুয়ার। আছে হস্তিদুয়ার-অশ্বদুয়ার। পুরীর মন্দিরের মতোই, এখানেও মূল মন্দিরের ৪টি ভাগ। গর্ভগৃহ। তার সামনে জগমোহন। তারপর নাটমণ্ডপ। তারপর ভোগমণ্ডপ। গর্ভগৃহে বেদির ওপর থাকবে, কাঠের তৈরি জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার মূর্তি, যা পুরীর আদলে নির্মিত। গর্ভগৃহে রয়েছে মোঘল ও ওড়িশি শিল্পের প্রভাব রয়েছে।
মূল মন্দির ছাড়াও রয়েছে বাগান, বিশ্রামাগার, জলপানের জায়গা এবং পাথরের বসার আসন। পুরো মন্দির এলাকা ঘিরে রয়েছে সাজানো বাগান, যেখানে রোপণ করা হয়েছে রজনীগন্ধা, গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকা, ও নানা দেশি ফুল। মন্দির উদ্বোধনের আগেই চন্দননগরের আলোয় সেজে উঠেছে সৈকতনগরী দিঘা। দিঘাকে সাজিয়ে তুলতে কাজ করেছেন প্রায় দু'শো জন কর্মী। তাঁদের শিল্পকলা ফুটিয়ে তুলতে ব্যবহার হয়েছে 'এসএমডি' লাইট। যা আনা হয়েছে চিন থেকে। মন্দিরের গম্বুজ থেকে শুরু করে প্রতিটি দরজার বসানো হয়েছে রঙিন লাইটিং, বিশেষ করে উদ্বোধনের দিন থাকবে লেজার শো ও ডায়নামিক লাইট শো।
পুরীর মন্দিরে যে ভাবে প্রতি দিন সন্ধ্যায় ধ্বজা তোলা হয় তেমনই দিঘার মন্দিরেও থাকবে একই ব্যবস্থা। নবান্ন সূত্রে খবর, মন্দির উদ্বোধনের পরেই তার পরিচালনার যাবতীয় দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে ইসকনের হাতে।
কী ব্যবস্থা থাকছে দর্শনার্থীদের জন্য?