সোমবার রামমন্দিরের মূল বিগ্রহের প্রাণ প্রতিষ্ঠা। আর ওই দিনই বিকেলে তৃণমূলের তরফে বিশেষ মিছিলের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে সংহতি মিছিল। কলকাতার হাজরা মোড় থেকে শুরু হয়ে মিছিল শেষ হবে পার্ক সার্কাসে। ওই মিছিলে থাকবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং জেলায় জেলায় এই কর্মসূচি পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি।
একদিকে বিজেপির রাম মন্দির অন্যদিকে তৃণমূলের সংহতি মিছিল। যদিও দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কর্মসূচি ঘোষণার দিনেই জানিয়ে দিয়েছেন এটা রাম মন্দিরের পালটা মিছিল নয়। তাহলে কেন এই মিছিল? লোকসভা নির্বাচনের আগে এই মিছিল কি অতিরিক্ত অক্সিজেন জোগাবে তৃণমূল কংগ্রেসকে?
রাজনৈতিক মহল এবিষয়ে অনেকেই অনেকরকম মন্তব্য করেছেন। যদিও প্রত্যেকেরই এক মত, ২২ জানুয়ারি ভারতের ইতিহাসে ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী থাকবে। তাদের একাংশের মত, লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে রাম মন্দির উদ্বোধন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একটা মাস্টারস্ট্রোক বলা যেতে পারে। একদিনের অনুষ্ঠানেই গোটা ভারতবাসীর মধ্যে একটা জনসংযোগ কর্মসূচি বলা যেতে পারে। অন্যদিকে ধর্ম নিরপেক্ষতার প্রচারে তৃণমূলনেত্রীর সংহতি মিছিলও একপ্রকার ধর্ম কেন্দ্রীক। ফলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন, গেরুয়া হোক বা জোড়াফুল ধর্মকে কেন্দ্র করেই লোকসভার আগে নতুন অস্ত্রে শান দিতে চাইছে উভয় পক্ষ।
অন্যদিকে আরএক অংশ ভিন্ন মত পোষণ করেছে। তাঁদের মতে, ধর্মকে নিয়ে ভোটব্যাঙ্ক ভরানোর চেষ্টায় দীর্ঘদিন ধরেই লড়াই করছে বিজেপি। প্রকাশ্যেই অনেক বিজেপি নেতা সেবিষয়ে মন্তব্যও করেছেন। এখানেই কিছুটা চিন্তা বেড়েছে তৃণমূল শিবিরে। তাঁদের বক্তব্য, একদিকে দুর্নীতি কাণ্ডে জর্জরিত জোরাফুল শিবির। সেখান থেকে ভোটব্যঙ্ক আর আগের মতো থাকবে কিনা সে নিয়ে সংশয়ে অনেক দলীয় নেতা। তারমধ্যে রামমন্দিরের জন্য অবাঙালি ভোট ব্যাঙ্কও অনেকটাই কমতে পারে বলে ধারণা।
পড়ে রইল বাম ও কংগ্রেস। CPIM পলিটব্যুরো সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন এই অনুষ্ঠানে তাঁরা অংশ নেবেন না। অন্যদিকে শঙ্করাচার্যের মন্তব্যকে হাতিয়ার করে রাম মন্দির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবে না বলে জানিয়েছে কংগ্রেস।
Read More- রামমন্দিরের উদ্বোধনের দিন, মমতার সংহতি যাত্রা, আঁটসাঁট নিরাপত্তার দায়িত্বে কলকাতা পুলিশ
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি উপস্থিত না থাকলেও এই অনুষ্ঠানের বিরোধিতা করার সাহস দেখাতে পারেনি কেউই। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মত, এখানেই একপ্রকার জিতে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তৈরি করেছেন শাঁখের করাত। বিরোধীদের জন্য যা শুধুই মুখ বন্ধ করে দেখা ছাড়া কোনও উপায় নেই।