ভারতের মতো জনবহুল দেশে ট্রেন এক গুরুত্বপূর্ণ যাতায়াতের মাধ্যম। ভারতীয় রেলই দেশকে এক সুতোয় বেঁধে রেখেছে। বর্তমানে ভারতের একের পর এক সুপার ফাস্ট ট্রেন চালু হওয়ায় দেশের এক অংশের মানুষের কাছে যাতায়াত আরও সহজ হয়েছে ।
আগামীতে রেলপথে যাতায়াতকে দ্রুত থেকে দ্রুততর করে তুলতে বুলেট ট্রেনে নিয়েও দেশে নানারকম কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু আপনি কি জানেন এই দেশে এমন এক ট্রেন রয়েছে যে ট্রেনে সাইকেলের চেয়েও কম গতিতে চলে। অবাক হলেন তো!
কথায় আছে এই ট্রেনে চেপে যদি কখনও ঘুমিয়ে পড়েন, ঘুম থেকে উঠলে দেখবেন তখনও আপনার গন্তব্য আসতে ঢের দেরি। আজ আমরা বলছি ভারতীয় রেলের সবচেয়ে ধীর গতিতে চলে এমন এক ট্রেনের কথা । তা বলে কি এই ট্রেনে যাত্রী সংখ্যা খুব কম? এমনও নয় কিন্তু।
আমরা বলছি নীলগিরি প্যাসেঞ্জার ট্রেনের কথা। তামিল নাড়ুর মেট্টুপালয়াম থেকে উটি যায় এই ট্রেন। এই ট্রেনের গতিবেগ ঘণ্টায় মাত্র ১০ কিলোমিটার। সেই কারণেই এই ট্রেনটিকে ভারতের সব চেয়ে ধীরগতির ট্রেন বলা হয়। মাত্র ৪৬ কিলোমিটার যাত্রাপথ অতিক্রম করতে এই ট্রেন সময় নেয় প্রায় পাঁচ ঘন্টা।
কেন ধীর গতিতে চলে এই ট্রেন?
আসলে এই ট্রেনটি দুর্গম পাহাড়ি এলাকা দিয়ে চলে। সেই কারণেই এই ট্রেনের গতি এত ধীরে। এমনকি দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের সম্প্রসারণ হিসাবে, এই ট্রেনটিকে 'ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট' বা 'বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থান' হিসাবে ঘোষণা করেছে ইউনেস্কো।
নীলগিরি প্যসেঞ্জার সমতল ভূমি থেকে ৩২৬ মিটার উপরের একটি স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে। ট্রেনটির যাত্রাপথ শেষ হয় ২২০৩ মিটার উচ্চতায়। দীর্ঘ এই ৪৬ কিলোমিটার পথে ১০০ টিরও বেশি রেলসেতু এবং একাধিক সুড়ঙ্গ পথ রয়েছে। আর চার পাশে রয়েছে চোখ জোড়ানো প্রাকৃতিক দৃশ্য। বিশেষ করে মেট্টুপালায়ম থেকে কুনুর পর্যন্ত রাস্তায় নাকি জানলা থেকে চোখ সরাতে পারেন না যাত্রীরা।
নীলগিরি প্যাসেঞ্জার ট্রেনের কামরাগুলি কাঠের তৈরি। পাহাড়ি অঞ্চলের গাঁ বেয়ে এই ট্রেন ছুটে চলে প্রতিদিন সকালে। এই ট্রেনটি সকালে উটি যায়। আবার ওই ট্রেনই ফেরার সময় উটি থেকে যাত্রী নিয়ে বিকেলে মেত্তুপালায়ামে ফিরে আসে। ভারতের দ্রুতগামী ট্রেন অর্থাৎ বন্দে ভারতের চেয়ে ১৬ গুন কম গতিতে ছোটে এই নীলগিরি প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি।