ডেটিং অ্যাপে আলাপ । ধীরে ধীরে প্রেম । সম্পর্কের শুরুটা খুব সুন্দরভাবেই হয়েছিল । কিন্তু, শ্রদ্ধা ওয়াকারের বাড়ির লোক মেনে নিল না আফতাবের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কটা । কিন্তু, তখনও বাড়ির কথা ভাবেনি শ্রদ্ধা । কষ্ট হয়েছিল, কিন্তু, আফতাবকে ভালবেসেছিল সে । তাই, নিজের বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিল শ্রদ্ধা । তখন ২০১৯ সাল,নাইগাঁও-এর একটি বাড়িতে একসঙ্গে থাকতে শুরু করে আফতাব-শ্রদ্ধা । কিন্তু, যার জন্য মা-বাবাকে ছেড়ে চলে আসা, সেই আফতাবের সঙ্গেই ব্রেকআপের সিদ্ধান্তও নিয়েছিল শ্রদ্ধা ওয়াকার । অভিযোগ, আফতাব নাকি তাঁকে মানসিক, শারীরিক...দু'ভাবেই অত্যাচার করেছে । মাকধর করত । এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন শ্রদ্ধার বন্ধুরা ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবর অনুযায়ী,শ্রদ্ধার এক বন্ধু জানিয়েছেন, মে মাসে এ ঘটনা ঘটার আগে, শ্রদ্ধা তাকে ফোন করে আফতাবের সঙ্গে ব্রেক-আপের সিদ্ধান্তের কথা জানায় । এও জানায়, দিল্লিতেই অন্য জায়গায় ঘর খুঁজছে সে । কিন্তু, তারপর ? শ্রদ্ধা যতবারই এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার কথা ভেবেছে, পারেনি । অভিযোগ,তাকে আফতাব বারবার ইমোশনাল ব্ল্যাকমেল করেছে, আত্মহত্যার করার হুমকি দিয়েছে । তাই,যন্ত্রণা সহ্য করেও সম্পর্ক বাঁচিয়ে রেখেছিল শ্রদ্ধা । কিন্তু, যন্ত্রণা দিন দিন বেড়েছে বই কমেনি । ২০২০, ২০২১...বারবার অত্যাচারিত হয়েছে শ্রদ্ধা ।
শ্রদ্ধার বন্ধু জানায়, ২০২১-এর জুন কিংবা জুলাই...তার উপর অত্যাচার করছে আফতাব, সেই বিষয়ে জানিয়ে তাকে টেক্সট করে শ্রদ্ধা । সেইসময় তারা কয়েকজন বন্ধু মিলে শ্রদ্ধাকে উদ্ধার করতে যায় । তখন শ্রদ্ধার ঘাড়,বুকে আঘাতের চিহ্ন দেখেছে তারা । সেইসময় দু'দিন অন্য এক বন্ধুর বাড়িতে ছিল শ্রদ্ধা, কিন্তু তৃতীয় দিন আফতাবের কাছে ফিরে গেল সে । আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছিল আফতাব, তাই পুলিশের কাছে না গিয়ে তার কাছেই ফিরে গিয়েছিল শ্রদ্ধা ।
শ্রদ্ধার বন্ধু জানায়, দু'জনের স্বভাব একেবারেই আলাদা । সবসময়ই তাদের ঝামেলা চলত । এবছরই তারা হিমাচল প্রদেশে বেড়াতেও গিয়েছিল । কিন্তু সেখানে গিয়েও ঝামেলা । তখন শ্রদ্ধা তার বন্ধুদের জানিয়েছিল, সে ব্রেক আপের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে । তাদের সম্পর্ক শেষের পথে । কিন্তু, সেখান থেকে ফিরে আসার পরেও দিল্লিতে একসঙ্গে থাকছিল তারা । বন্ধুরা ভেবেছিল, হয়তো শ্রদ্ধা ১৬ মে-এর অপেক্ষা করছে, কারণ, ওইদিন তাদের সম্পর্কের বর্ষপূর্তি । তারপরেই হয়তো এই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসবে সে ।
বন্ধুদের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখত শ্রদ্ধা । কিন্তু, চলতি বছরের মে মাসের শেষের দিক থেকে শ্রদ্ধার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ ছিল তাদের । দুই মাস শ্রদ্ধার বন্ধুরা অপেক্ষা করেছে । কিন্তু,পরে শ্রদ্ধার খোঁজ শুরু করে তারা । গোটা বিষয়টি শ্রদ্ধার বাবাকে জানানো হয় । এরপর তার বাবা ভাসাই পুলিশে যান । সেখান থেকে মামলা মানিকপুর থানায় স্থানান্তর করা হয় । তারপর মানিকপুর থানার পুলিশ দিল্লি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে আফতাবকে গ্রেফতার করে ।