ভারতের শিল্পের আকাশে বিরাট নক্ষত্র পতন। প্রয়াত শিল্পপতি রতন টাটা। বুধবার রাতে মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে তাঁর জীবনাবসান হয়েছে। বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। মাত্র ৭২ ঘণ্টা আগেই তাঁর মৃত্যু সংবাদ নিয়ে গুজব তৈরি হয়েছিল। নিজের সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে তাঁর জবাব দিয়েছিলে টাটা সন্সের চেয়ারম্যান। জানিয়েছিলেন, তিনি সুস্থ। এবং ভাল আছেন।
কিন্তু এই অল্প সময়ের মধ্যেই সব শেষ হয়ে গেল। তাঁর মৃত্যুর খবর প্রথম টুইট করেন ভারতীয় শিল্পপতি হর্ষ গোয়েঙ্কা। রতন টাটার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আর এক শিল্পপতি আনন্দ মহীন্দ্রাও। ১৯৯১ সালে টাটা সন্সের দায়িত্ব নেন রতন। এরপর বাকিটা ইতিহাস। বাংলায় তৎকালীন বাম সরকারের অনুরোধে সিঙ্গুরে ন্যানো কারখানা তৈরির স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন তিনি। পরবর্তী সময়ে সেই কারখানা তৈরি হয়েছিল গুজরাতের সানন্দে। রতন টাটার মৃত্যুতে রাতেই শোক প্রকাশ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শোক বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ভারতের শিল্পের আকাশে এক তারকার পতন হল। পুজোর আনন্দে এমন এক খবরে তিনি মর্মাহত। টাটার প্রয়ানে শোক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও সংসদের বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর। টাটা গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বয়সজনিত সমস্যায় সম্প্রতি রতন টাটাকে মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ডাক্তাররা চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না।
দেশের শিল্প বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন, রতনের জাদুকাঠিতে নব্বইয়ের দশকে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল টাটা গোষ্ঠী। তৎকালীন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের গ্যাট চুক্তির সমর্থক রতন টাটা প্রায় একার কাঁধে বিশ্বের দরবারে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন টাটা গোষ্ঠী।
টেলি কমিউনিকেশন থেকে তথ্য প্রযুক্তি-- রতনের হাত ধরেই বিপ্লব এ দেশে। জাগুয়ার এবং ল্যান্ড রোভারের মালিকানা তাঁর সময়েই। দু দফায় তিনি টাটা গোষ্ঠীর কর্নধার ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি টাটা সাম্রাজ্যের চেয়ারম্যান হিসাবে নিজের কর্মজীবনকে এগিয়ে নিয়ে যায়। ২০০৯ সালে ভারতবাসীকে উপহার দেন এক লাখি গাড়ি ন্যানো।