বৃহস্পতিবার ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় দানা। আবহাওয়াবিদদের অনুমাণ পুরী এবং সাগরদ্বীপের মধ্যবর্তী পারাদ্বীপ এলাকায় সবথেকে ঘূর্ণিঝড়ের সবথেকে বেশি প্রভাব পড়তে পারে। তার জেরে সমস্যায় পড়তে পারে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা। সেই কারণে দক্ষিণ পূর্বরেল এবং পূর্ব উপকূলীয় রেলওয়ের তরফে একাধিক ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। ২৩ তারিখ অর্থাৎ বুধবার থেকে শুরু করে ২৫ তারিখ অর্থাৎ শুক্রবার পর্যন্ত অন্তত ১৭৮টি দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই মর্মে মঙ্গলবার একটি প্রেস রিলিজ প্রকাশ করেছে ভারতীয় রেল। ওই প্রেস রিলিজে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় দানার জন্য আপ ও ডাউন লাইনে ২৩ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত প্রচুর ট্রেন বাতিল থাকবে। বাতিল হওয়া ট্রেনগুলির মধ্যে রয়েছে ৮৫টি আপ এবং ৯৩টি ডাউন লাইনের ট্রেন।
যে সব ট্রেনগুলি বাতিল করা হয়েছে সেগুলি পূর্বাঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে চলাচল করা। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন হাওড়া স্টেশন থেকে নিয়মিত ছাড়ে। বাতিল হওয়া ট্রেনগুলির মধ্যে রয়েছে ফলকনুমা এক্সপ্রেস, যশবন্তপুর এক্সপ্রেস, শতাব্দী এক্সপ্রেস-এর মতো একাধিক হাই প্রোফাইল ট্রেন।
এক নজরে দেখে নিন কোন কোন ট্রেন কবে বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে-
রেল আধিকারিকদের অনেকে জানিয়েছেন, মূলত বুধ ও বৃহস্পতিবার যে সব ট্রেনগুলি ওড়িশার উপর দিয়ে যাবে সেই সব ট্রেনগুলির মধ্যে অনেকগুলি বাতিলের তালিকায় রয়েছে।
শুধু ট্রেন বাতিল নয়, রেলের তরফে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। যাত্রীরা রেলে ভ্রমণকালে ঘূর্ণিঝড়ের জেরে কোনও সমস্যায় পড়লে ওই কন্ট্রোলরুমে যোগাযোগ করতে পারবেন। এছাড়াও বিভিন্ন স্টেশনে পদস্থ আধিকারিকরাও উপস্থিত থাকবেন। ঝড়ের প্রভাবে রেল লাইনের ওভারহেড তার ছিঁড়ে যেতে পারে। এই আশঙ্কা করে রেলের টেকনিক্যাল টিমকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা যায়।
শুরু রেল নয়, ঘূর্ণিঝড়ের জেরে যাতে বড় ক্ষয়ক্ষতি না হয় এবং যাত্রীদের সমস্যা না হয় তার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশেষ SOP জারি করা হয়েছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিমানবন্দরে যাতে জল না জমে তার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
মৌসম ভবনের তরফে যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে সেখানে জানানো হয়েছে, ২২ অক্টোবর অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। বুধবার তা শক্তিবৃদ্ধি করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে ধীরে ধীরে ওড়িশা উপকূলের দিকে এগোবে। এরপর বৃহস্পতিবার পুরী, কটক, ভদ্রক সহ বিভিন্ন উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে আছড়ে পড়বে। তবে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে পারাদ্বীপ।