কাশীর জ্ঞানবাপী মসজিদে (Gyanvapi Mosque) পুজোপাঠ করা এবং মথুরার শাহি ইদগা সরানোর দাবিতে যখন কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের একাংশ সরব, তখন উলটো সুর রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (Rashtriya Swayamsevak Sangh) প্রধান মোহন ভাগবতের (Mohan Bhagwat) গলায়। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক মসজিদেই কেন শিবলিঙ্গ খোঁজা হবে?’
অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের পর কাশীর জ্ঞানবাপী মসজিদে পুজোপাঠ করা এবং মথুরার শাহি ইদগা সরানোর দাবিতে সরব কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের একাংশ। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নাগপুরে এক সভায় ভাগবত বলেন, ‘‘আমাদের কিছু স্থান নিয়ে বিশেষ ভক্তি থাকতে পারে, কিন্তু রোজ নতুন নতুন বিষয় কেন খুঁচিয়ে তোলা হবে? আমাদের এই ধরনের বিতর্ক এড়ানো উচিত। জ্ঞানবাপী নিয়ে আমাদের ভক্তি-শ্রদ্ধা থাকতেই পারে কিন্তু সেজন্য প্রত্যেক মসজিদেই কেন শিবলিঙ্গ খোঁজা হবে?’’
Gyanvapi Update : জ্ঞানব্যাপীতে 'শিবলিঙ্গ', বিদ্বেষমূলক পোস্টের অভিযোগে গ্রেফতার দিল্লির অধ্য়াপক
এই প্রসঙ্গে সঙ্ঘপ্রধানের আরও বক্তব্য, ‘‘ইতিহাসকে তো আমরা পালটাতে পারি না। বর্তমান সময়ের কোনও হিন্দু বা মুসলিম এসব করেনি। এসব অতীতের ঘটনা। বহিরাগত আক্রমণকারীদের মাধ্যমে ইসলাম এ দেশে এসেছিল। দেশের স্বাধীনতাকামীদের মনোবল নষ্ট করতে দেবস্থান ভাঙা হয়েছিল। সকলকে আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে।’’ মন্দির-মসজিদ বিতর্কে পারস্পরিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে রাস্তা খোঁজার উপরে জোর দিয়েছেন তিনি। সবশেষে ভাগবত বলেন, ভাগবত বলেন, ‘‘ওঁরা (সংখ্যালঘুরা) হয়তো অন্য ধরনের উপাসনা করেন। কিন্তু মুসলিমরা আসলে আমাদেরই মুনি-ঋষি ও ক্ষত্রিয়দের বংশধর।’’
জ্ঞানবাপীর পরে কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের একাংশ এবার কুতুব মিনারেও পুজোপাঠ এবং তাজমহলের ‘প্রকৃত সত্য’ জানতে চেয়ে সরব হয়েছে। কিন্তু অনেকের মতে, এসব নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি হলে সমাজে তীব্র অসহিষ্ণুতা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিজেপি। তাদের আশঙ্কা, এর ফলে ভবিষ্যতে প্রায় প্রতিটি সংখ্যালঘু ধর্মস্থানের ঐতিহাসিক সত্য জানতে চেয়ে কেউ না কেউ যদি আদালতের দ্বারস্থ হতে থাকেন এবং কাঙ্ক্ষিত ফল না পান, সে ক্ষেত্রে দায় আসবে বিজেপির উপরে।
ভাগবতের মন্তব্য নিয়ে কংগ্রেসের শশী তারুর টুইট করে লেখেন, ‘এটি গঠনমূলক মন্তব্য। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের উচিত পারস্পরিক হানাহানি থেকে বিরত থাকা।’