এর আগে দেশের প্রথম রাজ্য হিসেবে নজির গড়েছিল কেরালা। এবার সেই পথে হাঁটল কর্ণাটক। ইউথেনেশিয়া বা স্বেচ্ছামৃত্যুকে বৈধ ঘোষণা করা হলো। এক মামলার প্রেক্ষিতে দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ভিত্তিতে নিষ্কৃতি মৃত্যু বা ইউথেনিশিয়াকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হলো।
‘ইউথেনেশিয়া’ একটি গ্রিক শব্দ, ‘ইউ’ এবং ‘থানাতোস’ থেকে এসেছে। ‘ইউ’-এর অর্থ 'সহজ' এবং ‘থানাতোস’ এর অর্থ, মৃত্যু। অর্থাৎ ‘ইউথেনেশিয়া’-র অর্থ ‘সহজ মৃত্যু’। এখানেই আইরনি। মৃত্যু কখনও সহজ হয়? না। তবে এ ক্ষেত্রে সেই বিশেষ বিশেষ অবস্থার কথা বলা হচ্ছে, যেখানে বেঁচে থাকার চেয়ে মৃত্যু বেছে নেওয়ার প্রয়োজন হয় বেশি।
নেদারল্যান্ড, কানাডা, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ডের মতো দেশে ইউথেনশিয়া বৈধ ছিলই। ভারতের দ্বিতীয় রাজ্য হিসেবে কর্নাটকে তা বৈধ হল। মৃত্যুযন্ত্রণায় কষ্ট পাওয়া অথবা দীর্ঘদিন কোমায় থাকা রোগীদের স্বজনরা 'নিষ্কৃতি মৃত্যু'র জন্য আবেদন করতে পারবেন।প্রায় চার বছর আগে দেশের সুপ্রিম কোর্ট এক ঐতিহাসিক রায় দিয়েছিল।
২০১৮ সালের সেই রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, মর্যাদার সঙ্গে মৃত্যু ব্যক্তির মৌলিক অধিকার। পরে ২০২৩ সালে সেই নির্দেশিকার সংশোধন হয়। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, কোনও ব্যক্তি যদি ইউথেনেশিয়ার ইচ্ছের কথা নোটারি বা সরকারি অফিসারের সম্মতিক্রমে উইল করে যান, তবে তা বৈধ বলে গণ্য হবে। সেখানে লিখিত ভাবে ব্যক্তিকে জানিয়ে যেতে হবে, ভবিষ্যতে তিনি নিশ্চিত মৃত্যুর মুখে চেতনাহীন থাকলে চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া যাবে। একে বলা হয় 'passive euthanasia'. প্যাসিভ ইউথ্যানেশিয়ার অর্থ হল কাউকে জীবিত রাখার জন্য ব্যবহৃত লাইফ সাপোর্ট বন্ধ করে দেওয়া
passive euthanasia-র বিষয়টি এতদিন পর্যন্ত ছিল চিকিৎসক এবং সরকারি বিশেষজ্ঞের বিবেচনাধীন। সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টিকে আরও সহজ সরল করল। আদালত বলেছে, বিষয়টি আর সরকারি অনুমোদন সাপেক্ষ নয়। মূলত হাসপাতালই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। ওই সংক্রান্ত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য চিকিৎসকদের ন্যূনতম ৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা বাধ্যতামূলক। প্যাসিভ ইউথেনেশিয়ার আবেদন জমা পরার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মেডিক্যাল বোর্ডকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে হবে।
প্যাসিভ ইউথেনেশিয়ার সিদ্ধান্ত আর সরকারি রিভিউ বোর্ডের বিবেচনাধীন থাকল না। সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে একজন জেলা মেডিক্যাল অফিসার থাকবেন হাসপাতালের মেডিক্যাল বোর্ডে। জেলাশাসককে পুরো ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত রাখা জরুরি।