Ratan Tata Death : তাঁর উত্তরসূরি কে ? এই প্রশ্ন জিইয়ে রেখে চির বিদায় রতন টাটার

Updated : Oct 10, 2024 18:34
|
Editorji News Desk

অনেকেই বলছেন রতন টাটার প্রয়াণ, ভারতের শিল্পবাণিজ্যের আকাশে এক নক্ষত্রের পতন। কিন্তু যে মানুষটিকে নক্ষত্র মনে করা হত, তাঁর মত ছিল ভিন্ন। নিজেকে কখনই নক্ষত্র, মহীরুহ এই ধরণের ভারী শব্দের বিশেষণে জড়াতে চাননি রতন টাটা। বরং বিরাট টাটা সাম্রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তাঁর মূলধন ছিল বিশ্রাম। তিনি বিশ্বাস করতেন বিশ্রাম জীবনের এমন একটা শব্দ, যা আগামীকালকে ভাবতে সাহায্য করে। আর আগামীকাল যদি মানুষের জীবনে স্বস্তির হয়, তাহলে যাত্রাপথ নিরাপদ এবং সুরক্ষিত থাকে। আমৃত্যু এই ভাবনাকেই নিজের কাজের হাতিয়ার করেছিলেন তিনি। যার সৌজন্যে টাটা আজ ভারতের মতো দেশের এক সাম্রাজ্যের নাম। যেখানে মধ্যবিত্তই আসল মুখ। 

সালটা ছিল ১৯৯১। বিশ্বায়নের পথে ভারত। বদল দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে। উদারীকরণ, এই শব্দের জাদুতেই আপামর দেশবাসীকে এক নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী মনমোহন সিং। বুঝিয়েছিলেন পশ্চিমের দরজা খুললেই বিশ্ব অর্থনীতিতে পক্ত হবে ভারতের স্থান। 

তবে সেই সময় অনেক দেশীয় শিল্পপতি সরকারের এই নীতির সমালোচনা করেছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন ধীরুভাই আম্বানির মতো তাবড় শিল্পপতিরা। তাঁদের আশঙ্কা ছিল, এই ভাবে দরজা হাট করলে একদিন ফের ভারতীয় অর্থনীতি অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে যাবে। ধসে যাবে দেশীয় উৎপাদন ধারা। 

ব্যতিক্রম ছিলেন একজন। তিনি, রতন নভল টাটা। যিনি সেইসময় বন্ধু মনমোহন সিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে দাবি করেছিলেন, উদারীকরণের এটাই আসল সময়। ভারতীয় অর্থনীতিকে বিশ্বজননী করতে হলে পশ্চিমের দরজা এখনই খোলা উচিত। কারণ, জেআরডি পরবর্তী সময়ে টাটার দায়িত্ব নিয়ে রতন বুঝেছিলেন দেশীয় অর্থনীতির উন্নতি সাধনে এমন কিছু একটা করা উচিত, যা ভারতের অবস্থানকে মজবুত করবে। যাতে দেশ এবং দশের উন্নয়ন হবে। 

এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। বরং রতনের সেদিনের এই সিদ্ধান্তেই আজ ভারতীয় অর্থনীতির ধারক হিসাবে নিজেদের মেলে ধরতে পেরেছে আম্বানি, আদানির মতো শিল্পগোষ্ঠীরাও। আর এসবের মধ্যেই বাণিজ্যকে মধ্যবিত্তের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে সফল হয়েছেন রতন টাটাও। যেখানে তিনি প্রমাণ করেছেন টাটা আজ কোনও বাণিজ্য সংস্থা নয়, এটা একটা সামাজিক সংস্থাও। যার প্রমাণ ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর মুম্বই হামলা। 

রতন টাটার হাত ধরেই নয়া ধাঁচে তৈরি হয়েছিল ক্ষতবিক্ষত তাজ। একক উদ্যোগে ওই ঘটনায় আহত সাধারণ মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন রতন টাটা। এমনকী, ২০০০-২০০১ সালের মধ্যে রতনের হাত দিয়ে ৬৫টি নতুন অনুদান সম্ভব হয়। বিবিধ কাজে সেই এক বছরে প্রায় ১৬ কোটি টাকা অনুমোদন করেছিল ট্রাস্ট। ট্রাস্টের দায়িত্বভার হাতে পাওয়ার পর রতন গ্রামের দরিদ্র মানুষের জীবনযাপনের মানোন্নয়নের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেন। বিশেষত, কৃষির বাইরে অন্য জীবিকায় গ্রামের মেয়েদের নিযুক্তির ব্যাপারে তাঁর তত্ত্বাবধানে ট্রাস্ট কাজ শুরু করে। তাই তাঁর মৃত্যুর খবরে এ দেশের শিল্পপতিদের বুক যতটা কেঁপেছে, বুধবারের রাতে ব্রিচ ক্যান্ডির দুয়ারে জড়ো হওয়াদের মধ্যে সবাই ছিলেন সাধারণ মানুষ। যাঁদের মসিহা আজ নেই। 

যা আশা করা যায়, যতখানি আশা করা যায়, তার থেকে একটু বেশি দিলেই হবে। এই মন্ত্রেই তাঁর সময় কালে টাটা আজ ভারতের এক সাম্রাজ্যের নাম। বারবার একটা কথা বলতেন রতন টাটা, ইতিহাস কী ভাবে মনে রাখবে জানেন না, কিন্তু তিনি টাটাকে একটা পারিবারিক প্রতিষ্ঠান থেকে একটা শিল্পোদ্যোগী সংস্থায় পরিণত করার চেষ্টা করেছিলেন। কারণ, এ দেশে টাটাদের বাদ দিলে বিড়লা, আম্বানিরাও আজও পারিবারিক ব্যবসায়ীক প্রতিষ্টান হিসাবেই রয়ে গিয়েছে। 

হ্যাঁ চেষ্টা। কারণ, নিজেই ঠিক করেছিল মানুষ ভাবতে পারে জীবনের ৭৫ বছর পর্যন্ত। তাই ওই বয়স পর্যন্ত টাটাকে নিয়ে তিনি ভেবেছেন। নতুন দিশা দিয়েছেন। অবসরের পরেও তিনিই ছিলেন এই সাম্রাজ্যের অবিসংবাদী সম্রাট। তাই ৭০ পেরিয়ে যাওয়ার পর হাসিমুখে চড়তে পেরেছিলেন এফ-সিক্সটিনে। চালিয়েছিলেন বোয়িং এফ-এইটিন। নব্বইয়ের দশকের জেআরডির ব্যাটন তিনি হাতে তুলে নিয়েছিল। তাঁর পর কে ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে বিশাল টাটা সাম্রাজ্য। 

Ratan Tata

Recommended For You

editorji | ভারত

Kashmir Attack: ভূস্বর্গ ভয়ঙ্কর! সন্ত্রাসে ক্ষতবিক্ষত ২৫ বছর এক নজরে

editorji | ভারত

Kashmir Attack: কাশ্মীরে ঘুরতে গিয়ে আর ফেরা হল না... মৃত ২৬ জনের মধ্যে বাংলার তিন

editorji | ভারত

Kunal Kamra: 'হাম হোঙ্গে কাঙ্গাল একদিন'! শিন্ডেসেনার রোষানলে কুণাল কামরা, পাচ্ছেন লাগাতার ডেথথ্রেট

editorji | ভারত

Sunita Williams: পেশী দুর্বল, সরু হয়ে এসেছে পা, মুখে বিশ্বজয়ের হাসি, ঘর ওয়াপসির পর কেমন আছেন সুনীতারা?

editorji | ভারত

Trolly Murder : আরও এক ট্রলি ব্যাগ কাণ্ডের সমাধান, হরিয়ানায় কংগ্রেস নেত্রী খুনে গ্রেফতার প্রেমিক