কারুর কাছে তিনি ছিলেন মেন্টর।
কারুর কাছে তিনি ছিলেন মাস্টারমশাই।
আবার কেউ লিখছেন, স্নেহ করার মানুষটি আর রইল না।
স্যালুট সংস্কারক।
যিনি জীবনের শেষ সাংবাদিক বৈঠকে বসে বলেছিলেন, ইতিহাস তাঁকে ঠিক মূল্যায়ন করবে। দেশবাসী তাঁকে কোনও দিন ভুল বুঝবে না। না তাঁকে দেশবাসী ভুল বোঝেনি। বরং আজ তিনি না থেকেও প্রাসঙ্গিক হয়ে থাকবে আগামী কয়েক বছরের ভারতীয় অর্থনীতির সঙ্গে। তিনি মনমোহন সিং।
৯২ বছর বয়সে দিল্লি অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল সায়েন্সেস তিনি প্রয়াত হয়েছেন। ২৬ ডিসেম্বর রাত ৯টা ৫১ মিনিটের পর থেকে সেই শোকেই ডুব দিয়েছে ১৪৫ কোটির ভারত। ভুলতে পারছে না সেই ১৯৯১ সালের মোড় ঘোড়ানো সিদ্ধান্তের কথা।
ক্যাপ্টেন নরসিমা রাওয়ের টিম ইন্ডিয়া তৎকালীন কংগ্রেসের সারপ্রাইজ প্যাকেজের নাম ছিল মনমোহন সিং। রাজ্যসভায় অসম থেকে প্রার্থী করে ভারতীয় অর্থনীতির অসুখ সারাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছিল এক ডক্টরেটের হাতে। অর্থনীতি যাঁর বিষয়, যাঁর ধ্যান-জ্ঞান।
লিবারালাইজেশন। ভারতীয় অর্থনীতির অভিযানে এই নতুন শব্দের স্রষ্টার নাম মনমোহন সিং। এরপর বাকিটা ইতিহাস। নেহরু পরবর্তী সময়ে তিনি ছিলেন কংগ্রেসের এখনও পর্যন্ত শেষ প্রধানমন্ত্রী। তাঁর এক দশকের শাসন ভাল-মন্দ মিশিয়ে। তবে আর্থিক সংস্কারের পাশাপাশি সমাজিক সংস্কার ভারত এক নতুন দিশা দেখিয়েছিল। যার মধ্যে দুটি উল্লেখ যোগ্য কাজ ছিল মনরেগা এবং খাদ্যের সুরক্ষা।
মৌন প্রধানমন্ত্রী। মূলত, দুর্নীতি ইস্যুতে বিরোধী শিবির থেকে বারবার এই কটাক্ষ শুনতে হয়েছে তাঁকে। তাঁর আমলেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে খাঁচাবন্দি তোতা বলে ভর্ৎসনা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। তবুও রাজনৈতিক মহল দাবি করে, তাঁর কাজে ছিল মুখরতা। তাই নিজের শেষ সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর সেই অমোঘ উক্তি আজও প্রাসঙ্গিক হয়েই রয়ে গেল।
ইতিহাস যেন তাঁকে ভুল না বোঝে। না বোঝেনি। স্যালুট সংস্কারক। প্রয়াত ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।