ব্যবধান কয়েক মাসের। কতটা পথ পেরলো উত্তরবঙ্গের কালিয়াগঞ্জ থেকে মধ্যপ্রদেশ সহজপুরি যাওয়া যায় জানা নেই। কিন্তু আজ, রবিবার বিশ্ব পিতৃ দিবসে সেদিনের অসীম দেবশর্মা যেন আজকে সুনীল ধুরভে। বাংলার পরিযায়ী শ্রমিক সেদিন চেয়েও হাসপাতালের সাহায্য পাননি। তাই ব্যাগে করেই সন্তানের দেহ নিয়ে ফিরেছিলেন শিলিগুড়ি থেকে। আর মধ্যপ্রদেশের দিনদোরি জেলায় সুনীলও অসহায়। ১৪০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার জন্য সরকারি হাসপাতাল থেকে একটা শববাহী গাড়ি চেয়েছিলেন। পাননি। তাই তাঁর সম্বল ছিল একটি ব্যাগ। আর তাতেই নিয়ে ফিরলেন সদ্যজাত পুত্র সন্তানের দেহ।
সেদিন বাংলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে অনেক হইচই করেছিলেন এ রাজ্যে অনেক বিজেপি নেতা। কিন্তু বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে আজ তাঁরা কী বলবেন ? বিশ্ব পিতৃ দিবসের প্রাক সন্ধ্যায় প্রকাশ পেয়েছে সুনীলের এই কাহিনি। যাঁর স্ত্রী যুমনা গত ১৩ জুন স্থানীয় এক সরকারি হাসপাতালে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। কিন্তু জন্মের পর থেকে শিশুর শারিরীক অবস্থা খারাপ হতে থাকে। তাই রেফার করা হয় জব্বলপুরের সরকারি হাসপাতালে। গত ১৫ জুন সেখানেই সুনীলের ফুটফুটে পুত্র সন্তানের মৃত্যু হয়।
সুনীল জানান, গত ১৫ জুন জব্বলপুরে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তাঁর ছেলের মৃত্যু হয়। একটা শববাহী গাড়ি চেয়েছিলেন হাসপাতালের থেকে। কিন্তু পাননি। তাঁর কাছে ওত টাকাও ছিল না। তাই মৃত ছেলের দেহ ব্যাগে নিয়ে বাসে করে ১৪০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে গ্রামে ফিরেছেন। যদি হাসপাতালের দাবি, জব্বলপুর থেকে ছাড়ার সময় শিশুর দেহে প্রাণ ছিল। আর তাদের কাছে শববাহী শকটের কোনও ব্যবস্থা থাকে না।
উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ হোক বা মধ্যপ্রদেশের দিনদোরি। দেশের স্বাস্থ্যের দৈন্যদশা যে এক, তা অসীম দেবশর্মাই হোক বা সুনীল ধুরভে চোখে আঙুল দিয়ে বারবার প্রমাণ করে দেন।
আরও পড়ুন - নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে বিবিসির তথ্যচিত্র, আরটিআইয়ের প্রশ্ন এড়িয়ে গেল কেন্দ্রীয় মন্ত্রক