ছমাস ধরে চাকরি নেই। বন্ধ রোজগার। জোগাড় হয়নি একরত্তি শিশুর খাবারটুকুও। খিদের জ্বালায় সন্তানকে ছটফট করতে দেখতে পারেননি বাবা। শেষমেষ খিদের জ্বালা জুড়াতে শিশুটিকে বুকের মধ্যে জোরে চেপে ধরে শ্বাস রোধ (Bengaluru Crime) করে মেরে ফেলেছিলেন। নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। পারেননি। পুলিশের জেরার মুখে এমনটাই জানিয়েছেন রাহুল পারামার। যা শুনে চমকে উঠেছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।
বছর পঁয়তাল্লিশের রাহুল গুজরাতের (Gujrat) বাসিন্দা। কিন্তু কর্মসূত্রে বেঙ্গালুরুতে থাকেন। জেরায় পুলিশকে জানিয়েছেন, এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী ছিলেন তিনি। চাকরি চলে যায়। এরপর গত ৬ মাস ধরে কোনও রোজগার ছিল না। বিটকয়েনের ব্যবসা করে আর্থিক মন্দা কাটিয়ে উঠবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু সেখানেও বড়সড়ো ধাক্কা খান। বাজারেও প্রচুর ধার দেনা হয়ে গিয়েছিল রাহুলের।
পুলিশ সূত্রের খবর ঋণের পরিমাণ এতটাই বেশি ছিল যে স্ত্রীর গয়নাও বিক্রি করতে হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। নিত্যদিন পাওনাদারদের আনাগোনা ছিল বাড়িতে। সবমিলিয়ে মানসিকভাবে কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন- ফের শিরোনামে দিল্লি! ব্যক্তির দেহ ২২ টুকরো করে ফ্রিজে রেখেছিলেন স্ত্রী-পুত্র, তারপর...
১৫ নভেম্বর মেয়েকে স্কুলে দিতে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হন রাহুল। এরপর থেকে মেয়ে এবং স্বামীর কোনও খোঁজ না পেয়ে তাঁর স্ত্রী বাগালুর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করে। এরপর পুলিশ ব্যাঙ্গালুরু-কোলার হাইওয়ের ধারে একটি জলাশয় থেকে দু বছরের বাচ্চার দেহ উদ্ধার করে।
জেরার মুখে রাহুল জানিয়েছেন, ওই দিন সকালে ব্যাঙ্গালুরুর আশেপাশে মেয়েকে গাড়িতে নিয়ে ঘোরেন কিন্তু কিভাবে আত্মহত্যা করবেন স্থির করতে পারছিলেন না। এরপর ওই জলাশয়ের ধারে সন্ধ্যেবেলায় গাড়ি দাঁড় করান তিনি। মেয়ের জন্য বিস্কিট এবং চকলেট কিনে আনেন।
পকেটে আর কোনও টাকা ছিল না। মেয়ের সঙ্গে কিছুক্ষণ খেলাও করেন। কিন্তু ওই বিস্কুট আর চকলেটে মেয়ের খিদে মেটে না। সে কেঁদে ওঠে। এরপরই চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন রাহুল। নিজেও জলাশয়ে ডুবে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন কিন্তু জল কম থাকায় বেঁচে যান তিনি। রাহুলের কথার সত্যতা যাচাই করতে গোটা ঘটনা তদন্ত করছে পুলিশ