পাটশিল্পকে (Jute Industry) বাঁচাতে উদাসীন কেন্দ্রের বিজেপি (Bjp) সরকার। না কোনও বিরোধী নেতার গলায় এই অভিযোগ নয়। এই অভিযোগ খোদ বারাকপুরের (Barrackpore) বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের (Arjun Singh)। শুধু অভিযোগ করে ক্ষান্ত থাকেননি তিনি। প্রয়োজনে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) স্মরণাপন্ন হতে চান বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন। বাংলার পাট শিল্পকে বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ। দরকারে কেন্দ্রের (Central Goverment) বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতেও তৈরি তিনি। সোমবার দিল্লি অর্জুনের এই ইঙ্গিতে বেশ অবাক রাজ্যের রাজনৈতিক মহল। কারণ, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পর থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সকাল বিকেল নিজের ক্ষোভ জানান বারাকপুরের সাংসদ। সেই অর্জুন কীনা ইঙ্গিত দিচ্ছেন, বাংলার পাঠশিল্পকে বাঁচাতে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে যৌথ আন্দোলনে নামবেন। অর্জুনের দাবি, ‘‘প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েও লাভ হয়নি।’’
সোমবার দিল্লিতে এক টেলিভিশন চ্যানেলে বারাকপুরের সাংসদ কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন। তাঁর অভিযোগ, "ফেব্রুয়ারি মাসে আমরা কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী পীযূষ গয়ালকে একটা স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। শিল্পপতি এবং শ্রমিক সংগঠনদের সদস্যদের নিয়ে ওঁর সঙ্গে দেখা করেছিলাম। কিন্তু ওঁকে কিছুতেই বোঝানো যাচ্ছে না।’’ অর্জুনের দাবি, বস্ত্রমন্ত্রী তাঁকে জানিয়েছেন, পাটের বদলে কেন্দ্র প্লাস্টিক কিনে নেবে। বেশ হুঁশিয়ারির সুরে অর্জুন জানান, “কেন্দ্র সরকার এ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ না করলে রাস্তায় নামতে হবে। সবক’টি ট্রেড ইউনিয়নকে নিয়ে আন্দোলন করতে হবে। এনিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাকলে, সেখানও যাব। এটা নিয়ে লড়াইয়ের দরকার আছে।” আচমকাই অর্জুনের গলায় কেন্দ্র বিরোধিতার সুর যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল।
আরও পড়ুন : সিবিআইকে ফের চিঠি অনুব্রতর, মে মাসের শেষ সপ্তাহে হাজিরা দিতে পারেন তৃণমূল নেতা
তা-হলে এবার অর্জুনও বেসুরো ? তাঁর জবাবে বারাকপুরের সাংসদ জানিয়েছেন, বিষয়টা তিনি দলকেও জানিয়েছেন। এই প্রতিবাদ দল ভাল ভাবে নেবে কি নেবে না, সেটা কোনও বিষয় নয়। তিনি মানুষের ভোটে সাংসদ হয়েছেন। আর সেই মানুষের কথাই তিনি এখানে বলেছেন। কারণ, চট শিল্পের প্রাণকেন্দ্রে তাঁর জন্ম। সেখানেই বেড়ে ওঠা। তাই নিজের চোখের সামনে পাট শিল্পের ধ্বংস তিনি দেখতে পারবেন না। হিসাব বলছে, ১৪টি জুটমিল বন্ধ হয়েছে। আরও ১০টি বন্ধ হয়ে যাবে। পাটশিল্পের সঙ্গে আড়াই কোটি মানুষ জড়িত। ৪০ লক্ষ চাষি রয়েছেন।
অর্জুনের চট-বিদ্রোহ নিয়ে প্রতিক্রিয়া এসেছে বিজেপি (Bjp)-তৃণমূল (Tmc) দুই মহল থেকেই। সাবধানী হলেও মুখ খুলেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। তিনি জানিয়েছেন, “কেন্দ্রের কোনও নীতি পছন্দ না হলে সমালোচনা করতেই পারে। কিন্তু আন্দোলনে নেমে কী লাভ! তার চেয়ে যারা বিষয়টি সমাধান করতে পারবে, তাদের সঙ্গে বৈঠক দরকার।” আর তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) কটাক্ষ, “বাংলার স্বার্থে কাজ হচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবে মোহভঙ্গ তো হবেই।”