শীত এসে গেছে। আর শীতকাল মানেই চিড়িয়াখানা। বাচ্চাদের নিয়ে বাঘ, সিংহ, হাতি দেখতে নিয়ে যায় পরিবারগুলি। আলিপুর চিড়িয়াখানাতেও প্রতি বছরই একই দৃশ্য দেখা যায়। তবে আপনি যদি প্রকৃতিকে ভালবাসেন, জৈববৈচিত্র্যকে ভালবাসেন, তা হলে একটু ভাববেন। এই পশুপাখিরা বছরের অন্য় সময়, ধরুন প্রবল গরম বা টানা বর্ষায় কীভাবে থাকে! এমন নয় সবাই ভাবেন না। অনেকেই ভাবেন, তাই চিড়িয়াখানায় থাকা অনেক পশু, পাখি বা বিরল প্রজাতির প্রাণীকে দত্তক নেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে দেশজুড়েই।
২০১৩ সালে আলিপুর চিড়িয়াখানা প্রথম অ্যানিমাল অ্যাডোপশন প্রোগ্রাম শুরু করেছিল। সেই সময় দেশে মোট ১২টি চিড়িয়াখানার প্রাণীকে দত্তক নেওয়ার চাহিদা ছিল। তার মধ্য়ে অন্য়তম ছিল আলিপুর চিড়িয়াখানা। এখন সেই তালিকায় আছে বেশ কয়েকটি চিড়িয়াখানা। পুরুলিয়ার সুরুলিয়া মিনি জু, দার্জিলিং চিড়িয়াখানা, শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি, বর্ধমান জুলজিক্যাল পার্ক ও নিউটাউনের হরিণালয়েও এই অ্যাডোপশন পদ্ধতি আছে। যে প্রাণীর খরচ বহন করা যায়।
শুধু কলকাতা বা এই রাজ্য নয়। ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও প্রাণীদের দত্তক নেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। চিড়িয়াখানা, সংরক্ষণাগার বা ন্যাশনাল পার্কে কোনও বিশেষ প্রাণীর দত্তক নিতে চান অনেকেই। মধ্যপ্রদেশের ভোপাল বনবিহারে অনেকেই এখন চান, ন্যাশনাল পার্কের বিভিন্ন প্রাণীকে দত্তক নিতে। কিন্তু দত্তক নিলেই তো হয় না। ওই প্রাণীকে মন থেকে ভালবাসতে হয়, প্রকৃতিকে ভালবাসতে হয়। শুধু বাঘ, সিংহ, হাতি, চিতাবাঘের মতো বড় প্রাণী নয়, জৈববৈচিত্র্য়ে ছোট প্রাণী, কীটপতঙ্গ, সবাই খুব গুরুত্বপূর্ণ।
Byte
7:59-8:52
সাকিনা
দর্শক
ভোপাল
12:42-12:59
Byte
অক্ষর জৈন
দর্শক
ভোপাল
কীভাবে দত্তক নেবেন!
দেশের সব চিড়িয়াখানাতেই কম বেশি একই নিয়ম। আপনি যদি কোনও প্রাণীকে দত্তক নিতে চান, তা হলে তার জন্য নির্দিষ্ট মেয়াদ আছে। আপনি এক মাস, ৬ মাস বা এক বছরের জন্য় দত্তক নেওয়া যায়। জাতীয় উদ্যান বা চিড়িয়াখানার সব প্রাণীর সংরক্ষণের কাজ করে সরকার। এবার বেসরকারি সাহায্য়ও নেওয়া শুরু হয়েছে। যাতে ওই পশুরা একটু বিশেষ সুযোগ সুবিধা পায়। তাদের খাওয়া-দাওয়া, থাকা সব বেসরকারি উদ্যোগে ভাল করে সম্পন্ন করতে পারে কর্তৃপক্ষ। আগে বড় বড় সংস্থা প্রাণীদের দায়িত্ব নিতে। এখন অনেক ব্যক্তিও সাহায্য়ের জন্য এগিয়ে আসছেন।
16:43-18:13
কত খরচ
ন্যাশনাল ফরেস্টে দত্তক নিলে কীভাবে চলে! একটি বাঘ, সিংহ, হাতি দত্তক নিলে বার্ষিক খরচ ২ লক্ষ টাকা। অন্য় প্রাণীদের জন্য আলাদা আলাদা রেট। তবে দত্তকের মেয়াদ নির্দিষ্ট সময় পর্যন্তই। একজন দত্তক নিলে, তাঁকেই টেনে যেতে হবে, এমন নয়। জানিয়েছেন ভোপালের জাতীয় উদ্যানের এক কর্তা।
18:20-19:17
উপ বন সংরক্ষক
ভোপাল জাতীয় উদ্যান
বিশ্ব উষ্ণায়ন বাড়ছে। হিমালয়ের বরফ গলছে। হারিয়ে যাচ্ছে অনেক বিরল প্রজাতি। জীববৈচিত্র্যের গুরুত্ব বাড়ছে। এরকম সময় চিড়িয়াখানা ও জাতীয় উদ্যানে প্রাণীদের বেসরকারি উদ্যোগ নেওয়া হলে আখেরে লাভ প্রাণীকূলের। আলিপুর চিড়িয়াখানার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে গত কয়েক বছরে প্রাণীদের দত্তক নেওয়ার বেশ কিছু পরিসংখ্যান পাওয়া গিয়েছে। জানা গিয়েছে, ২০২০ ও ২০২১ সাল পর্যন্ত শেষবার দত্তক নেওয়ার প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ওই বছর মোট ১২টি প্রাণীকে দত্তক নেওয়া হয়েছিল। যার মধ্যে আছে শিম্পাঞ্জি, হলুদ অ্য়ানাকোন্ডা, ফিশিং ক্যাট, পাঙ্গোলিন, বার্ন আউল, ম্যান্ডারিন ডাক, কচ্ছপ। ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সাত বছর ধরে আলিপুর চিড়িয়াখানায় যে সব প্রাণীকে দত্তক নেওয়া হয়েছে, তাদের তালিকা আছে।