মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় CID তদন্তের নির্দেশ। সোমবার নবান্নে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জানিয়েছেন, বিষাক্ত স্যালাইন দেওয়ার পিছনে যাঁদের ভূমিকা রয়েছে, তাঁদের কাউকে ছেড়ে কথা বলা হবে না। ঘটনাকে দুঃখজনক দাবি করে, তিনি জানিয়েছেন, SSKM ভর্তি আক্রান্তরা আগের তুলনায় অনেক ভাল আছেন।
অতি সম্প্রতি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীকে রাজ্যে নিষিদ্ধ স্যালাইন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন মামনি রুইদাস নামের এক প্রসূতি। সেই ঘটনার প্রভাব এবার লক্ষ্য করা গেল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের সরকারি হাসপাতালেও।
যেখানে নিষিদ্ধ রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইনের সব বোতল তুলে নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, গ্রামীণ হাসপাতালেও এই নিষিদ্ধ স্যালাইন দেওয়া হচ্ছিল রোগীদের। মেদিনীপুরের খবর চাউর হতেই রিঙ্গার ল্যাকটেট বন্ধ করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। এই ঘটনায় আতঙ্ক দ্বিগুণ হয়েছে।
কারণ, রোগীরা অনেকেই স্যালাইন নিতে অস্বীকার করেছেন বলে জানতে পারা গিয়েছে। এই ঘটনার পর জেলার মেডিক্যাল অফিসার জানিয়েছেন, মেদিনীপুরের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েই গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে সব স্যালাইন সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
এদিকে, মেদিনীপুরের ঘটনার পর শুধু রাজ্যের জেলার গ্রামীণ হাসপাতাল নয়, কর্নাটকের কোম্পানির এই নিষিদ্ধ স্যালাইন বার করার কাজ শুরু হয়েছে কলকাতার SSKM হাসপাতালেও। রবিবার রাতে গ্রিন করিডর করে মেদিনীপুর হাসপাতাল থেকে এখানে আনা হয়েছে তিন অসুস্থ প্রসূতিকে। তাঁদের প্রত্যেকেই রাখা হয়েছে আইসিইউতে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন প্রসূতির অবস্থা এখন স্থিতিশীল।
এসবের মধ্যেই স্যালাইন নিয়ে অভিযোগ উঠল কলকাতা হাই কোর্টে। সরকারি হাসপাতালে কেন নিষিদ্ধ স্যালাইন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে জমা পড়েছে দুটি জনস্বার্থ মামলা। দুই মামলাকারীকে মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।
এই অবস্থায় স্যালাইন বিতর্কের গায়ে লেগে গেল রাজনীতির রং। ঘটনার প্রতিবাদে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছে কংগ্রেস। ঘটনার তীব্র বিরোধিতা করছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। উঠেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী পদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবি। এই ঘটনায় তৃণমূলের পাল্টা হাতিয়ার বাম আমলের সিরিঞ্জ কেলেঙ্কারির অভিযোগ। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার এবং প্রসূতি বিশেষজ্ঞকে তলব করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।