এ যেন আক্ষরিক অর্থেই 'সাপও মরবে, অথচ লাঠিও ভাঙবে না'। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে এখন নরমে-গরমে অদ্ভুত কৌশল নিয়েছে শাসক তৃণমূল। একদিকে মমতা কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়ে পার্থকে মন্ত্রিসভা থেকে ছেঁটে ফেলেছেন। তখন অন্যদিকে, অভিষেক নিজে উদ্যোগী হয়ে চাকরি নিয়ে এসএসসি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার রাস্তা খুলেছেন।
অভিযুক্ত পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ মডেল-অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি টাকা, অলঙ্কার এবং বিবিধ সম্পত্তির দলিল উদ্ধার হয়েছে। এখন আসছে একের পর এক ‘বেনামি’ সম্পত্তির খোঁজ। শুধুমাত্র দৃশ্যাবলির অভিঘাতে তৃণমূলের কাছে এই ঘটনা সারদা বা নারদ-কাণ্ডের চেয়েও অনেক বেশি অস্বস্তির।
আরও পড়ুন- Arpita Mukherjee: অর্পিতার বন্ধ ফ্ল্যাটে বন্দি পার্থর শখের সারমেয়রা, চিন্তায় ঘুম উড়েছে পশুপ্রেমীদের
পার্থ প্রথম দিন থেকে তৃণমূলের প্রথম সারির নেতা। তিনিই দলের প্রথম মহাসচিব। দল ক্ষমতায় আসার পর থেকে টানা মন্ত্রী। সদ্যপ্রাক্তন হওয়ার আগে পর্যন্তও একই সঙ্গে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দফতরের ভার ছিল তাঁর হাতে। ফলে পার্থর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠা এবং সেই অভিযোগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তাঁকে গ্রেফতার করা অনেক বেশি উদ্বেগের।
পার্থকে যে তিনি মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দিতে চলেছেন, সে বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে কোনও আঁচ দেননি মমতা। পার্থকে নিয়ে মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে কোনও আলোচনাই করেননি তিনি। রুটিন আলোচ্যসূচি মেনেই মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়েছে। কিন্তু ওই বৈঠকের পরেই পার্থকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর বিষয়ে সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে।
পাশাপাশি, একই দিনে অভিষেক কথা বলেন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে। এরপর শুক্রবার বিকেলে তাঁর দফতরে আন্দোলনকারীদের মধ্যে বাছাই প্রতিনিধিদের নিয়ে আসেন তৃণমূলের মুখপাত্র তথা দলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। বৈঠকে ডাকা হয় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকেও। সেখানে দীর্ঘ সময় ধরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করেন অভিষেকরা। বৈঠকের শেষে আন্দোলনকারীরা বেরিয়ে এসে জানান, তাঁরা ‘সন্তুষ্ট’। অভিষেক যথেষ্ট ‘মানবিক’ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।