নদিয়ার হাঁসখালি, পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা-সহ রাজ্যে গত কয়েকদিন ধরে চলা মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনা নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। এই ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশও করেন তিনি। বাংলার বছর শেষের দিনে নিজের লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত দক্ষিণেশ্বরে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, "যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মহিলা সেখানে নারী নির্যাতনের একটি ঘটনা ঘটলেও তা লজ্জার।" তৃণমূল সাংসদের এই মন্তব্য়ের পরেই এই ইস্য়ুতে সরকারকে চাপে রাখতে আরও উদ্যোগী হয়েছে বিরোধী বিজেপি ও কংগ্রেস।
এদিন দক্ষিণেশ্বরে এক কর্মসূচিতে সৌগত বলেন, ‘‘সকলেই চিন্তিত মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনায়। এখানে একদম জিরো টলারেন্স করতে হবে। কোনওরকম কোনও ঘটনা ঘটলে কঠোরতম ব্যবস্থা নিতে হবে।’’ এ বিষয়ে পুলিশকে নজর দেওয়ার বার্তাও দেন তিনি। সৌগত বলেন, ‘‘আমি আশা করব পুলিশ-প্রশাসন এদিকে নজর রাখবে।’’ সম্প্রতি রাজ্যের চার ধর্ষণের ঘটনায় সিটের বিশেষ নজরদারীতে তদন্ত চালাতে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। দেগঙ্গা, মাটিয়া, ইংরেজবাজার, বাঁশদ্রোণী থেকে হাঁসখালি, পিংলা - এই পরিস্থিতিতে বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদের এই মন্তব্যকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই দাবি করছে রাজনৈতিক মহল। তাদের মতে, এর আগেও একাধিক ইস্যুতে দলের ব্যাপারে মুখ খুলেছিলেন সৌগত। তবে এবার তিনি যা বলেছেন, তাতে তৃণমূলের অস্বস্তি আরও বাড়তে পারে। বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট আয়োজিত দক্ষিণেশ্বরের ওই কর্মসূচিতে সৌগতের পাশাপাশি হাজির ছিলেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রও।
এ ব্যাপারে সৌগত মন্তব্য স্বাগত জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘সৌগত বাবু ভাল মানুষ। সঠিক কথা বলেছেন। তবে যতটা দৃঢ় ভাবে বলা প্রয়োজন ছিল তা পারেননি। কারণ ক্ষমতায় রয়েছে তাঁরই দল।’’ বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সৌগতবাবু যাঁকে ‘মহিলা মুখ্যমন্ত্রী’ বলেছেন, এ রাজ্যের পুলিশমন্ত্রীও তো তিনিই। পুলিশকে নির্দেশটা তা হলে কে দেবেন?’’
অন্য দিকে তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘তা হলে যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুরুষ সেখানে ঢালাও নারী নির্যাতন চলতে পারে? মুখ্যমন্ত্রী পুরুষ বা নারী যে হোন না কেন, কিছু যায় আসে না। নারী নির্যাতন নামে ব্যাধিটাকে দূর করতে হবে।’’