একদিকে হুগলির সিঙ্গুর। অন্যদিকে বীরভূমের ডেউচা। দু বছর পর রাজ্যে বাণিজ্য বৈঠকের প্রথম দিনে এই দুটি জায়গাকে হাতিয়ার করল বঙ্গ বিজেপি। সকালে সিঙ্গুর ঘুরে রাজ্যের শিল্পনীতির সমালোচনা করলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আর দুপুর গড়িয়ে বিকেলে ডেউচায় গিয়ে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, ‘‘এই রাজ্যে শুধু চপ শিল্প হবে। আর চপ ব্যবসায়ীরাও সপ্তাহে তিন দিন দোকান খুলবেন না। কারণ সবাইকে সম্মেলনে যেতে হবে।’’
তবে ডেউচা গেলেও পাঁচামি যাননি শুভেন্দু। অরাজনৈতিক মঞ্চ থেকে তাঁকে ডাকা হলে, তবেই তিনি যাবেন বলে জানান নন্দীগ্রামের বিধায়ক।
বীরভূমের ডেউচা-পাঁচামির জট খুলে গিয়েছে বলে বঙ্গের বাণিজ্য সম্মেলনে ফের দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, এই কয়লা ব্লকে লক্ষাধিক কর্মসংস্থান তৈরি হবে। সেই ডেউচায় দাঁড়িয়ে এদিন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করলেন, ‘‘এখানে ডেউচা-পাঁচামি হবে না। সাধারণ মানুষ চায় না। ইতিমধ্যে অনেক আদিবাসীর পেনশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা সমস্ত বিষয় নিয়ে আদালতে যাব।’’ একইসঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘এই এলাকায় বারবার আসব। আন্দোলনকারীদের পাশে থাকব।’’
শুভেন্দু যখন বীরভূমের ডেউচায়, তার আগেই হুগলির সিঙ্গুরে ঢু মারেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এই এলাকার সাংসদ বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে অবশ্য রাজ্য বিজেপির সভাপতির সঙ্গে দেখা যায়নি। সিঙ্গুরে সুকান্তর অভিযোগ, ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার আগে এই এলাকাকে তৃণমূল নেত্রী শিল্পের বধ্যভূমিতে পরিণত করেছিলেন। তার পর উনি বলেছিলেন, কাশফুল থেকে লেপ-বালিশ তৈরি করার কথা। সে সব কিছু হয়েছে কি না তা দেখতে তিন এখানে এসেছিলেন। এরসঙ্গেই জুড়ে দেন রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার প্রসঙ্গে। অভিযোগ করেন, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর। সিন্ডিকেট রাজ এবং শাসকদলের দাদাগিরি বন্ধ না হলে এ রাজ্যে শিল্পায়ন হবে না।
রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, রাজ্য বাণিজ্য সম্মেলনের দিনেই দুই বিজেপি নেতা কেন সিঙ্গুর ও ডেউচায়। কারণ, ইতিমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে ৪ মে রাজ্যে আসবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কলকাতা ও শিলিগুড়িতে সাংগঠনিক বৈঠকও করবেন তিনি। তা-হলে কী সেই বৈঠকের আগে নিজেদের জমি তৈরি করে রাখতে চাইছেন সুকান্ত-শুভেন্দুরা ? কারণ, আসানসোলের হারের কারণ, নিশ্চই এই দুই নেতার কাছে জানতে চাইবেন অমিত শাহ।