আরজি করে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা সামনে আসার পর থেকে আলোচনায় হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। তাঁর মেয়াদকালে আরজি কর হাসপাতাল থেকে রাতারাতি উধাও ১৮৬টি শয্যা! কীভাবে শয্যাগুলি ‘ভ্যানিশ’ হল, তার কোনও উত্তর নেই এখনও।
আনন্দবাজার পত্রিকার খবর অনুযায়ী, ২০২৩ এর মে মাসে আর জি কর হাসপাতালের বায়োমেডিক্যাল বর্জ্যের মাসিক রিপোর্ট বলছে, হাসপাতালের মোট শয্যা-সংখ্যা ১৩৮৬। কিন্তু ২০২৩ সালের ১১ অগস্টের রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নথিতে দেখা যাচ্ছে, ওই হাসপাতালের শয্যা-সংখ্যা ১২০০! অর্থাৎ, ১৮৬টি শয্যা উধাও।
তবে এই ভুল ইচ্ছাকৃত কিনা, বং বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য-দুর্নীতির সঙ্গে এর যোগ রয়েছে কিনা, তা-ও স্পষ্ট নয়। অনেক সময়েই সরকারি নথিতে আগের তথ্য ‘কপি-পেস্ট’ করা হয়, এ ক্ষেত্রেও তেমনই কোনও ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি অনেকের। চিকিৎসাক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্তদের একাংশ এ যুক্তি মানতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, শয্যা-সংখ্যার সঙ্গে বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য-দুর্নীতি ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। মূলত লাল রঙের ব্যাগই হল দুর্নীতির মূল বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা। লাল রঙের ব্যাগে স্যালাইনের বোতল, আইভি টিউব, প্লাস্টিক সিরিঞ্জ, গ্লাভস, জলের বোতল-সহ একাধিক সরঞ্জাম থাকে। এই সব বর্জ্যের বাজারদর রয়েছে। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের রিপোর্ট জানিয়েছিল, আর জি করে স্যালাইনের বোতল পুরো দুমড়ে-মুচড়ে ফেলার কথা হলেও তা করা হয়নি। স্বাভাবিক ভাবেই তা নিয়ে দুর্নীতি-চক্র গড়ে ওঠার আশঙ্কাও বেশি। তবে দুর্নীতি হয়ে থাকলে, সে ক্ষেত্রে শুধু সন্দীপ ঘোষ জড়িত, না কি তাঁর সঙ্গে একটি চক্র কাজ করত, সেই প্রশ্ন উঠছে।
আরজি করে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় সন্দীপ ঘোষকে লাগাতার তলব করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। এছাড়া ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে এ পর্যন্ত অর্থাৎ ডঃ সন্দীপ ঘোষ অধ্যক্ষ থাকার সময়ে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে যে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, তার তদন্তে একটি সিট গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে।
সিবিআইয়ের এফআইআর-এর ভিত্তিতেই এই ইসিআইআর দায়ের করেছেএনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেটও । অভিযুক্ত হিসাবে প্রথম নামই সন্দীপ ঘোষের। টানা ১০ দিন সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে সন্দীপ ঘোষ। সিবিআই তাঁর বাড়িতে পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়েছে।