আরজি কর হাসপাতালে ডিউটিরত মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই আলোচনায় হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। সন্দীপের ডাক্তারির রেজিস্ট্রেশন বৃহস্পতিবারই বাতিল করেছে রাজ্য মেডিকাল কাউন্সিল। এবার জানা গেল, গত ১২ অগাস্ট থেকে-২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি নিয়েছিলেন সন্দীপ ঘোষ, সেই সময়ের জন্য বেতন পাবেন না সন্দীপ।
১২ অগাস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর, প্রায় ২০ দিনের 'এক্সট্রা অর্ডিনারি লিভ'। রাজ্য সরকার সন্দীপের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার পর জানিয়েছে, এই ২০ দিনের মাইনেও পাবেন না সন্দীপ। তবে সন্দীপ ঘোষের রেজিস্ট্রেশন বাতিলের নিয়মের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে ওয়েস্ট জয়েন্ট প্ল্যাটফর্মস অফ ডক্টর্স ফোরাম। অভিযোগ করা হয়েছে, নিয়ম বহির্ভুত ভাবে রেজিস্ট্রেশন বাতিল করলে পরে রেজিস্ট্রেশন ফিরে পাওয়াও অসম্ভব নয়।
ডাক্তারদের তরফে দাবি, ২০২০ সালে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার পদ থেকে অবসর নেন মানস চক্রবর্তী। তারপর লিখিত নির্দেশের ভিত্তিতে ৬ মাসের জন্য মানস চক্রবর্তীর মেয়াদ বৃদ্ধি হলেও তার পর মৌখিক নির্দেশের ভিত্তিতে তিনি এখনও ওই পদে রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে মানস চক্রবর্তীর নির্দেশের ভিত্তিতে সন্দীপের রেজিস্ট্রেশন বাতিল আদৌ বৈধ হতে পারে কিনা, সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ডাক্তারদের দাবি, যে কোনও মুহূর্তে এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করলে রেজিস্ট্রেশন ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষের।
গত ৭ সেপ্টেম্বর, আরজি করের ঘটনায় হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে শোকজ নোটিস পাঠায় রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শোকজের উত্তর চাওয়া হয়েছিল। ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলের আইন অনুযায়ী কোনও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তাঁকে শোকজ নোটিস পাঠাতে পারে রাজ্য, শোকজের উত্তর মনঃপুত না হলে ওই ডাক্তারের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে পারে রাজ্য। কিন্তু সন্দীপ ঘোষের ক্ষেত্রে ১১ দিনেও তেমন কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি ।
আরজি কর হাসপাতালে ডিউটিরত মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার হন তিনি। অবশ্য তার আগেই ১ সেপ্টেম্বর আরজি করের আর্থিক দুর্নীতির কারণে সন্দীপকে গ্রেফতার করে সিবিআই।
সম্প্রতি সন্দীপের বিরুদ্ধে হংকং-এর এক পুরুষ নার্সকে বছর সাতেক আগে যৌন হেনস্থার অভিযোগের খবর নতুন করে সামনে এসেছে। এবার সন্দীপের ল্যাপটপ ঘেঁটে সিবিআই আধিকারিকরা একাধিক পুরুষের নগ্ন ছবি পেয়েছেন বলে খবর। এ ছাড়াও বহু আর্থিক লেনদেনের এক্সেল শিট পাওয়া গিয়েছে ল্যাপটপ থেকে।
সন্দীপ ঘোষকে নিয়ে রোজই নতুন কোনও না কোনও তথ্য সামনে আসছে। এবার সিবিআই স্ক্যানারে সন্দীপের প্রাইভেট প্র্যাকটিস! সেখানকার প্রেসক্রিবশনে সন্দীপের রাজিস্ট্রেশন নম্বরের উল্লেখ থাকত না বলেই অভিযোগ। এমন কী পুরো নামও নাকি থাকত না, বদলে উল্লেখ থাকত ডঃ এস ঘোষ।