সিবিআইয়ের পর ইডি। আর জি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তে হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বেলেঘাটার বাড়িতে এবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট ! শুক্রবার সন্দীপের বাড়ি ঘিরে ফেললেন জওয়ানরা। ভোর ৬ টা ২৫ থেকে দরজার বাইরে ইডি-কর্তারা। সঙ্গে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সন্দীপের বাড়ির দরজা কেউ খুলছেনই না।
আরজি কর হাসপাতালে ডিউটিরত মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং হত্যার ঘটনায় হাসপাতালের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। লাগাতার ১৬ দিন জেরার পর আর্থিক অনিয়মের অন্য একটি মামলায় সন্দীপকে গত সোমবার রাতে গ্রেফতার করে সিবিআই। মঙ্গলবার সন্দীপের ৮ দিনের সিবিআই হেফাজত হয়। অর্থাৎ সন্দীপ ঘোষ এই মুহূর্তে বাড়িতে নেই। এদিকে দরজা খুলছেন না বাড়ির অন্য কোনও সদস্য। অন্যদিকে হাওড়ার সাঁকরাইলে ভেন্ডর বিপ্লব সিংহর বাড়িতেও তল্লাশি অভিযান করছে ইডি।
আরজি করের আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া বিপ্লব সিংহের দুর্নীতি সম্পর্কেও বেশ কিছু তথ্য হাতে এসেছে সিবিআই এর। তাঁর পরিবারের অনেকের নামে নানা সংস্থা তৈরি করে রেখেছিলেন বিপ্লব। হাসপাতালের কোনও টেন্ডার বেরোলেই সেই সব সংস্থার নামে টেন্ডার জমা করা হত। এমন কী হাসপাতালের বহু কর্তাকে কাগজ না দেখিয়েই তাঁদের নামে এই সব সংস্থাকে কাজের বরাত দেওয়া হত।
প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। আর্থিক অনিয়মের মামলায় সন্দীপের পাশাপাশি দুই ভেন্ডর বিপ্লব সিংহ, সুমন হাজরাকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। জানা গিয়েছে এক মেডিক্যাল সাপ্লায়ারের কাছ থেকে হাসপাতালের সোফা সেট এবং রেফ্রিজারেটর কিনেছিলেন সন্দীপ! CBI সন্দীপ ঘোষকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে যে রিমান্ড লেটার জমা দিয়েছে, তাতে স্পষ্টই উল্লেখ রয়েছে তা, হাজরা মেডিকেল নামের ওই সংস্থার মালিক সুমন হাজরা।
সন্দীপ ঘোষের মেয়াদকালে আরজি কর হাসপাতাল থেকে রাতারাতি উধাও ১৮৬টি শয্যা! কীভাবে শয্যাগুলি ‘ভ্যানিশ’ হল, তার উত্তর স্পষ্ট নয় এখনও। তবে এই ভুল ইচ্ছাকৃত কিনা, বং বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য-দুর্নীতির সঙ্গে এর যোগ রয়েছে কিনা, তা-ও স্পষ্ট নয়।
উল্লেখ্য, ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন এবং ন্যাশনাল অর্থোপেডিক অ্যাসোসিয়েশন আগেই সাসপেন্ড করেছিল সন্দীপকে। সিবিআই এর হাতে গ্রেফতারির পর সন্দীপকে সাসপেন্ড করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।