আরজি করের ঘটনায় নাম জড়ানোর পর থেকে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ আসছে হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি হংকং-এর এক পুরুষ নার্সকে বছর সাতেক আগে যৌন হেনস্থার অভিযোগের খবর নতুন করে সামনে এসেছে। এবার সন্দীপের ল্যাপটপ ঘেঁটে সিবিআই আধিকারিকরা একাধিক পুরুষের নগ্ন ছবি পেয়েছেন বলে খবর। এ ছাড়াও বহু আর্থিক লেনদেনের এক্সেল শিট পাওয়া গিয়েছে ল্যাপটপ থেকে। সেগুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সন্দীপের বাড়ি নয়, সন্দীপের এক আত্মীয়র বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ল্যাপটপটি।
২০১৭ সালে হংকং এর এক হাসপাতালের এক পুরুষ নার্স দাবি করেন, সন্দীপ ঘোষ তাঁর পোষাক পরিবর্তনের সময় ঘরে ঢুকে নিতম্ব স্পর্শ করে জিজ্ঞেস করেন, 'ডু ইউ লাইক ইট'। সন্দীপের দাবি ছিল শোল্ডার ডিসলোকেশন কীভাবে ঠিক করতে হয়, তা শেখানোর সময় অনিচ্ছাকৃত ভাবে তাঁর হাত ওই নার্সের নিতম্ব ছুঁয়ে যায়। তাঁর আরও দাবি, শোল্ডার ফিক্স করার পদ্ধতি শিখিয়ে তিনি বলেছিলেন 'ডু ইট লাইক দিস', সেটি নাকি ভুল বোঝেন ওই নার্স। আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ সমপ্রেমী কিনা, তা খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
আরজি করের ঘটনা সামনে আসার পর থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের ৫ দফা দাবির অন্যতম ছিল, সন্দীপ ঘোষকে সাসপেন্ড করতে হবে। সেই দাবি মেনে ৩ অগাস্ট সন্দীপকে সাসপেন্ড করে রাজ্য। রাজ্যের তরফে সাসপেন্ড করার অর্থ, পশ্চিমবঙ্গের কোনও সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন এবং ন্যাশনাল অর্থোপেডিক অ্যাসোসিয়েশন সাসপেন্ড করে দিয়েছে সন্দীপকে।
লাগাতার ১৬ দিন জেরার পর আরজি কর কাণ্ডে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে ১ সেপ্টেম্বর সন্দীপকে গ্রেফতার করে সিবিআই, ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজত হয়েছে সন্দীপের।
গত শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টেও বড় ধাক্কা খেয়েছেন সন্দীপ। আরজি কর কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ, সন্দীপের সেই আবেদন খারিজ করে শুনানিতে শীর্ষ আদালত জানায়, যে মামলায় তিনি নিজে অভিযুক্ত হয়ে সিবিআই হেফাজতে, সেই মামলা নিয়ে আপত্তি জানানোর কোনও এক্তিয়ার সন্দীপের নেই।