আরজি করে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু কোন্নগরের যুবকের, শুক্রবার এমনই এক অভিযোগ ওঠায় রাজ্যজুড়ে হইচই পড়ে যায়, টুইট করে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের পাশাপাশি পরিষেবা জারি রাখার বার্তা দেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্ব ভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে বলে দাবি করলেন আরজি কর হাসপাতালের এমএসভিপি ডঃ সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায়।
আরজি কর হাসপাতালে ডিউটিরত মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং মৃত্যু ঘিরে বাংলাজুড়েই আন্দোলন চলছে। বিচারের দাবিতে সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ, মিছিলের পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি চলছে। এরই মাঝে শুক্রবার কোন্নগরের এক ২৮ বছরের যুবক বিক্রম ভট্টাচার্যর মৃত্যু হয়। পথ দুর্ঘটনায় মাথায় গুরুতর চোট ছিল তাঁর। বিক্রমকে প্রথমে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, প্রাথমিক চিকিৎসার পর আরজি করে রেফার করা হয়। বিক্রমের পরিজনদের অভিযোগ, আরজি কর হাসপাতালে ওপিডি বং ইমার্জেন্সিতে ৩ ঘণ্টা ধরে ঘোরার পর রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয় যুবকের। এই ঘটনা সামনে আসার পর তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ফেসবুকে পোস্ট করে সোচ্চার হন, ডাক্তারদের উদ্দেশ্যে পরিষেবা সচল রেখে আন্দোলন জারি রাখার বার্তা দেন।
একই ঘটনা টুইট করে অভিষেকও আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের উদ্দেশে বার্তা দেন, পরিষেবা চালু রেখে আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। গঠনমূলক বিক্ষোভের কথা উল্লেখ করেন অভিষেক।
যুবকের মৃত্যু নিয়ে হাসপাতালের তরফে কী বলা হচ্ছে, জানতে চাওয়া হলে আরজি কর হাসপাতালের এমএসভিপি ডঃ সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায় এক সংবাদমাধ্যমকে জানান, যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা ভুল। সকাল ৮ টা ৪০ এ ভর্তি হওয়া রোগী পলিট্রমার রোগী ছিলেন, এক্স রে এবং যাবতীয় পরীক্ষা ওচিকিৎসা করা হয়েছে। সিটি স্ক্যানের সময়ে হাইপোভলিমিক শকের কারণে ঘণ্টা তিনেক পর, দুপুর ১২ টার কাছাকাছি তাঁর মৃত্যু হয়। ডঃ চট্টোপাধ্যায় আরও জানান, কেউ আরটিআই করলেও হাসপাতাল সব নথি দিয়ে প্রমাণ করতে পারবে, যে রোগী বিনা চিকিৎসায় মারা যাননি।
সেই ভিডিয়োটি নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে শেয়ার করলেন ডাক্তারদের আন্দোলনের অন্যতম মুখ কিঞ্জল নন্দ। সঙ্গে উল্লেখ করেন, ডাক্তারদের কর্মবিরতি নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। কিঞ্জলের সেই পোস্ট আবার শেয়ার করেন আরজি করের নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে পথে নামা একাধিক জনপ্রিয় মুখ। তার মধ্যে রয়েছেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় এবং অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তীরা।
আরজিকর হাসপাতালে ডিউটিরত মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় কলকাতা পুলিশের সিপি বিনিত গোয়েলের পদত্যাগ চেয়ে লালবাজার অভিযান করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। পুলিশ কমিশনারকেই সেই ডেপুটেশন জমা দিয়ে আসেন। তারপর লালবাজারের সামনে থেকে অবস্থান বিক্ষোভ উঠলেও বিচারের দাবিতে আন্দোলন চলবে বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। জুনিয়র ডাক্তারদের ৫ দফা দাবির একটি ছিল আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে সাসপেন্ড করতে হবে। দিন কয়েক আগেই রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর সাসপেন্ড করেছে সন্দীপকে, শনিবার শোকজ নোটিস পাঠিয়ে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর চাওয়া হয়েছে। উত্তর সন্তোষজনক মনে নয়া হলে সন্দীপ ঘোষের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে পারে ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিল।