২০ জানুয়ারি, ২০২৫:
আরজি কর ধর্ষণ ও খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাবাসের সাজা দেওয়া হল। সোমবার শিয়ালদহ আদালতের বিচারপতি অনির্বাণ দাস বলেন, সঞ্জয় রায়কে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত জেলে থাকতে হবে। শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাসের কাছে নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবীর আর্জি ছিল যে, বিশ্বাসভঙ্গ করেছে দোষী। তাঁকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হোক।
উল্লেখ্য, আরজি কর মামলায় গত শনিবার সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক দাস। সে দিনই তিনি জানান, সোমবার তিনি সাজা শোনাবেন। পাশাপাশি, বিচারক এ-ও জানান, সাজা ঘোষণার আগে সঞ্জয়ের কথা শুনবেন। আর কেউ যদি কিছু বলতে চান, তা-ও শুনবেন বলে জানিয়েছিলেন। সোমবার সাজা ঘোষণার শুনানি চলাকালীন এজলাসে উপস্থিত ছিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। বিচারক এজলাসে এসে প্রথমেই তাঁদের খোঁজ নেন। তার পরই সঞ্জয়ের বক্তব্য শোনেন।
৬ ডিসেম্বর, ২০২৪:
জয়নগরে নাবালিকার খুন এবং ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তকে ফাঁসির সাজা দিল বারুইপুরের অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট সেশন ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। ঘটনায় অভিযুক্ত মুস্তাকিন সর্দারকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল বৃহস্পতিবারেই। জানানো হয়েছিল, শুক্রবার সাজা ঘোষণা করা হবে। সেই মতই এদিন অভিযুক্তের ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেন বারুইপুর ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারপতি সুব্রত চ্যাটার্জি। ঘটনার ৬২ দিনের মাথায় সাজা ঘোষণা করল আদালত। উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৪ অক্টোবর চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী জয়নগরের কৃপাখালির বাসিন্দা নাবালিকা নিখোঁজ হয়ে যায়।
বাড়ির লোকের সঙ্গে তল্লাশি চালাতে থাকে স্থানীয় কুলতলি থানার পুলিশ। শেষপর্যন্ত বাড়ির থেকে এক কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যেই একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয় নাবালিকার দেহ। রাতেই গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্ত মুস্তাকিনকে। ঘটনার জেরে ক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের গাড়ি ও পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধে জনতার সঙ্গে আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী।
পকসো আইনে মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্তে ৭ অক্টোবর একটি সিট গঠন করে পুলিশ। তদন্ত করে ঘটনার ২৫ দিনের মাথায় ৩০ অক্টোবর চার্জশিট জমা দেওয়া হয় বারুইপুর আদালতে। শুরু হয় ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে বিচার। মামলায় সাক্ষ্য দেন ৩৬ জন। শেষপর্যন্ত সব পক্ষের বক্তব্য শুনে ও তথ্য প্রমাণ খতিয়ে দেখে বৃহস্পতিবার ৫ ডিসেম্বর বারুইপুর পকসো আদালত মুস্তাকিনকে দোষী সাব্যস্ত করে। তারপরের দিনই ফাঁসির সাজা ঘোষণা করল আদালত।
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
জয়নগরের পর ফরাক্কাতেও শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত দুজনের মধ্যে একজনকে সাজা ফাঁসির সাজা ও আরেকজনকে যাবজ্জীবন শোনাল আদালত। ঘটনার ৫৯ দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার দোষী সাব্যস্ত হয় ২ আসামী দীনবন্ধু হালদার ও শুভজিত হালদার। আজ হল সাজা ঘোষণা।
গত ১৩ অক্টোবর দশমীর সকালে ফরাক্কায় ফুল দেওয়ার নাম করে এক শিশুকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ, চরম শারীরিক নির্যাতন এবং খুন করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবারই ২ অপরাধীকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। শুক্রবার হল সাজা ঘোষণা। জঙ্গিপুর ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের ডিস্ট্রিক্ট সেকেন্ড জাজ অমিতাভ মুখোপাধ্য়ায় অভিযুক্ত দীনবন্ধু হালদারকে ফাঁসি ও শুভজিত হালদারকে যাবজ্জীবন সাজার নির্দেশ দেন।
১৭ জানুয়ারি, ২০২৫
রাজ্য তথা দেশের মধ্যে দৃষ্টান্ত। জুলাই ২০২৪ কার্যকর হওয়া পকসো এবং বিএনএস, এই নতুন আইনে অভিযোগ দায়েরের মাত্র ৫২ দিনের মধ্যে বিচার পর্ব সম্পন্ন করে অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। ৫৪ দিনের মাথায় সেই মামলায় অভিযুক্তের ফাঁসির নির্দেশ দিয়েছেন চুঁচুড়া পকসো আদালতের বিচারক চন্দ্রপ্রভা চক্রবর্তী।
মামলার সরকারি আইনজীবী শঙ্কর গাঙ্গুলি জানিয়েছেন, এই রায়দান রাজ্য তথা দেশের মধ্যে দৃষ্টান্ত, কারণ প্রথমত আগে গোটা দেশে পকসো মামলার বিচার প্রক্রিয়া চলতো পকসো এবং আইপিসি অনুসারে। গত ২০২৩ সালে সংসদে নতুন পকসো বিএনএস আইন পাশ হয়। পরবর্তী সময়ে ২০২৪ সালের ১ জুলাই সেই আইন কার্যকর হয়। সেই আইন অনুযায়ী চালানো বিচার প্রক্রিয়ায় স্বল্প সময়ের মধ্যে রায়দানের ক্ষেত্রে এই মামলা অন্যতম। হিসেব অনুযায়ী ৫৪ দিনের মাথায় রায়দান হলেও সময় লেগেছে মাত্র ৩৭ দিন।