পুজোর মুখে বন্যা পরিস্থিতি বাংলা জুড়ে। ডিভিসির ছাড়া জলে ভেসে গিয়েছে হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা। বানভাসি দক্ষিণবঙ্গের ১০ জেলা। দুর্গত প্রায় ৫০ লক্ষের বেশি মানুষ। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার পাঁশকুড়ার পরিস্থিতি দেখতে পৌঁছেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এহেন অবস্থায় একাধিক চাষের জমি চলে গিয়েছে জলের তলায়।
এর জেরে বহু ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে কৃষকদের। এই সুযোগে এক শ্রেণির ফড়ে কৃত্রিম ভাবে দাম বাড়াতে শুরু করেছে। যার সরাসরি প্রভাব এসে পড়েছে শহর, মফস্বল থেকে শুরু করে গোটা বাংলার বাজারেই। এর জেরে শনিবার রবিবারের বাজারে ফল, সবজি থেকে কাঁচা আনাজ কোনও কিছুতেই হাত ছোঁয়ানো যাচ্ছে না।
সোমবার নবান্নে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ফের এবিষয়ে বৈঠক করতে পারেন। বিক্রেতাদের দাবি যোগান কমের কারণেই তাঁদের বেশি দামে জিনিস তুলতেও হচ্ছে , বেচতেও হচ্ছে। গত দুদিনের মধ্যে সবজি-আনাজপাতির দাম কেজি প্রতি ২০-৩০ টাকা করে বেড়েছে। পুজোর সময় আরও দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে পুজোর মুখে ফের চোখ রাঙাচ্ছে নিম্নচাপ, ঘূর্ণাবর্ত। তাই বৃষ্টি বাড়লে আগামী দিনেও ফসলের ক্ষতি জারি থাকবে। যে সবজি হাটে ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে শনিবারও তাই বাজারে এসে ৬০-৭০ টাকা হয়েছে।
উল্লেখ্য , রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেছেন, মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে প্রায় ৫ লাখ কিউসেক জল ছাড়ার ফলে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রায় ১৫ বছর পর এমন ভয়াবহ বন্যার সম্মুখীন হয়েছে বাংলা।
বিগত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণবঙ্গে। তার সঙ্গে মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে ধাপে ধাপে ছাড়া হয়েছে প্রায় ৫ লাখ কিউসেক জল। এর ফলে নিম্ন দামোদর এলাকার বিস্তীর্ণ এলাকা জলে ডুবে গিয়েছে। সবথেকে পরিস্থিতি খারাপ হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল, হুগলির খানাকুলের। কিছু জায়গায় জল প্রায় ১০ থেকে ১২ ফুট পর্যন্ত উঠে গিয়েছে। ভেঙে গিয়েছে একাধিক দোতলা বাড়ি। এমনকি ঘাটাল থানার ভিতরেও প্রায় এক বুক জল। বহু বাঁধ ভেঙে যাওয়ার জল ঢুকেছে অনেক গ্রামে।