ধীরে ধীরে শীতের ফেস্টিভ মুডে ঢুকছে বঙ্গবাসী। গুটি গুটি পায়ে শীত ঢুকছে বাংলায়। শীত মানেই পিকনিকের মরসুম। আর পিকনিকের কথা উঠলেই বাংলার কিছু জায়গার নাম এক ঝটকায় মাথায় আসে। আসানসোলের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র মাইথন । রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা পিকনিক করতে আসেন মাইথন জলাধারে, ঠিক তেমনই পার্শবর্তী রাজ্য ঝাড়খন্ডের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও পর্যটকরা শীতের দুপুরে মিঠে রোদ মাখতে আসেন এই দামোদরের তীরে। প্রতিবছরই শীতের মরশুমে ভিড় উপচে পরে মাইথনে। এবার পর্যটকদের জন্য আগে থেকেই কোমর বাঁধছে জেলা প্রশাসন। সেজে উঠছে দামোদরের পাড়।
মাইথনে দেখার কী কী?
কলকাতা থেকে প্রায় ৫ ঘণ্টার দূরত্ব। আসানসোলের থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার। পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডের সীমান্তে বরাকর নদীর উপর ১৫৭১২ ফুট দীর্ঘ ও ১৬৫ ফুট উঁচু বাঁধ এবং ৬৫ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে পাহাড় ঘেরা চোখ জোড়ানো এই মাইথন জলাধার। সঙ্গে লাগোয়া প্রায় ৫০০ বছরের পুরোনো কল্যাণেশ্বরী মন্দির। এখানকার অন্যতম আকর্ষণ টলটলে দামোদরের জলে নৌকা বিহার।
সাজছে নৌকো:
দুপুরের রোদে পিঠ ভিজিয়ে, পিকনিকের এলাহি লাঞ্চের আগে মাইথনে গিয়ে একটি বার নৌকা বিহার না করলে আপনার ট্রিপই মাটি। এই সময়ের জন্য অপেক্ষায় থাকেন মাইথনের নৌকা চালকরাও। নৌকাচালক থেকে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ছোট বড় সমস্ত ব্যবসায়ীদের আশা এবছরে পর্যটকদের ভীড় অন্যান্য বছরের রেকর্ড ভাঙবে। ইতিমধ্যেই তাই তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন চালকরাও। নৌকার ফুটো ফাটা দেখে মেরামত চলছে। আলকাতরার পর রঙ করা হচ্ছে নৌকায়। সাজিয়ে তোলা হচ্ছে নতুন করে। পর্যটকদের দেওয়া হয় সেফটি জ্যাকেটও
কীভাবে যাবেন মাইথন?
কলকাতা থেকে মাইথন পৌঁছতে সময় লাগবে ঘণ্টা চারেক। মাইথন যাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হল, হাওড়া থেকে ট্রেন ধরে যেতে হবে আসানসোল। স্টেশন থেকে অটো ধরে আসুন আসানসোল বাসস্ট্যান্ড, সেখান থেকে মাইথন যাওয়ার প্রচুর মিনিবাস এবং বাস মিলবে।
অথবা হাওড়া থেকে কুমারডুবি নামুন। সেখান থেকে অটো বা বাসে আপনি সরাসরি পৌঁছে যেতে পারেন মাইথন। একাধিক বেসরকারি সংস্থার বাসে করে কলকাতা থেকে আসানসোল এসে মাইথন যেতে পারেন।
পর্যটনে জোর সরকারের:
প্রশাসনের তরফে পর্যটকদের সুবিদার্থে সমস্ত রকমের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।সালানপুরের বিডিও দেবাঞ্জন বিশ্বাস বলেন প্রত্যেক বছর যেরকম ব্যবস্থা থাকে সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য সেইরকম ব্যবস্থা এইবারও থাকবে।জলের ব্যবস্থা থাকবে পরিষ্কার,পরিছন্ন রাখার দিকটাও বিশেষ লক্ষ থাকবে, সাথে মানুষকে সচেতন করার ব্যাপারটা থাকবে।
শীতের রোদ গায়ে মেখে, পা ছড়িয়ে কমলালেবু খেতে খেতে গল্প হোক, কিংবা সকলে মিলে একটা দিন হৈহুল্লোড়, রান্নাবান্না , খেলাধুলো- বছরে এমন দিন কিন্তু সচরাচর আসে না, এলে তাকেই বলে পিকনিক। আর দেরি না করে মাইথনের প্ল্যানটা বানিয়েই ফেলুন।