কলকাতার সরকারি হাসপাতালের মধ্যে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করার ঘটনা বিরল থেকে বিরলতম নয়। সোমবার এই মামলায় সাজা ঘোষণা করতে গিয়ে পর্যবেক্ষণ শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনিবার্ণ দাসের। যদিও এদিন সাজা ঘোষণার আগে এই ঘটনাকে বিরল থেকে বিরলতম বলেই দাবি করেছিলেন সিবিআইয়ের আইনজীবী।
এদিনের রায়ে ঘটনায় দোষী সঞ্জয় রায়ের আমৃত্যু কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক অনিবার্ণ দাস। যদিও শিয়ালদহ আদালতের এই রায় নিয়ে খুব একটা খুশি হতে পারেননি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা থেকে মুর্শিদাবাদ যাওয়ার আগে এদিনও তিনি ফাঁসির পক্ষেই সওয়াল করেছিলেন তিনি।
দুপুরে মালদহে হাজির হয়ে তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনায় রাজ্য শুরু থেকেই ফাঁসির দাবি করেছিল। এই মামলা যদি রাজ্যের হাতে থাকত তাহলে অবশ্যই ফাঁসির সাজা হত। কারণ, দু মাসের মধ্যে রাজ্য তিনটি ঘটনায় ফাঁসির সাজা কার্যকর করেছে। এরমধ্যে রয়েছে জয়নগর, ফরাক্কা এবং অতি-সম্প্রতি গুড়াপের ঘটনা।
এদিন মালদহে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আরজি করের ঘটনায় যদি ফাঁসির সাজা হত, তাহলে তিনি সান্ত্বনা পেতেন। কারণ, জোর করে তাঁদের হাত থেকে এই মামলা ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। নাম না করলেও, পরোক্ষে এই ঘটনায় সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
আরজি করের ঘটনায় দোষী সঞ্জয় রায়কে এদিন নরপিশাচ বলে অভিহিত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, রাজ্যের হাতে এই মামলা থাকলে, নরপিশাচদের চরম শাস্তি হত। এই মামলায় সঞ্জয়কে সাজা দেওয়ার পাশাপাশি রাজ্যকেও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। যদিও এজলাসে দাঁড়িয়ে সেই অর্থ নিতে অস্বীকার করেছেন মৃত চিকিৎসকের পরিবার।
তৃণমূল এবং সিপিএম শিবিরই সংশয় প্রকাশ করেছে সিবিআইয়ের ভূমিকায়। কলকাতা পুলিশের ভূমিকাতেও প্রশ্ন রয়েছে বামেদের। শাস্তি নিয়ে খুশি নয় বিজেপিও। সিবিআইয়ের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়েও সন্দেহ রয়েছে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের মনে। তাঁর প্রশ্ন, “বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের এত কথা বলা হল, কিন্তু তদন্তে তার প্রতিফলন কই?” আরজি কর কাণ্ডে দোষীর শাস্তি ঘোষণার পর খুশি নন বিজেপি নেতৃত্বও। বিজেপি নেতা অমিত মালবিয়ার দাবি, দোষী সঞ্জয় রায়ের আমৃত্যু কারাবাস এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানায় বিচার মেলেনি।