তাঁদের মধ্যে কারও স্বামীকে বাঘে টেনে নিয়ে গিয়েছে। কারও বাবা আবার বাঘের কামরে হারিয়েছেন নিজের দু'টি পা। অনেকের পরিজন মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলেও বাঘের আক্রমণে হারিয়েছেন দু'টি হাত। পরিবারের কর্তাদের এমন অবস্থার কারণে সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছেন তাঁরা। দুর্গা পুজো এলেও সংসার সামলাতে গিয়ে আর নতুন জামা পরা হয় না তাঁদের। তাই দুর্গা পুজোর আগে এই সকল দুঃস্থ মানুষদের মুখে হাসি ফোটাতে উদ্যোগ নিলেন কুলতলী থানার ওসি অর্ধেন্দু শেখর দে সরকার। তাঁর তত্ত্বাবধানে কুলতলী থানার অন্যান্য অফিসাররা মিলে নিজেদের বেতনের টাকায় প্রায় ৪০০ পরিবারকে পুজোয় নতুন জামা কাপড় উপহার দিলেন।
হাতে গোনা আর কয়েকটা দিন। তারপরেই শুরু হবে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। ইতিমধ্যেই ভোরের শিউলির গন্ধ বার্তা দিচ্ছে আগমনীর। উমাকে স্বাগত জানাতে সেজে উঠছে গ্রাম এবং শহরের সমস্ত পুজো মণ্ডপগুলি। আর পুজো মানেই আপামর বাঙালি সব কাজকর্ম শিখেই তুলে নেমে পড়ে আনন্দে। দুর্গা পূজা মানেই বাঙালির নতুন জামা কাপড় পরে ঠাকুর দেখতে যাওয়া ।পরিবারের সদস্যেদের সঙ্গে হই হুল্লোড় দিনভর।
কিন্তু কুলতলী থানার অন্তর্গত সুন্দরবন লাগোয়া গ্রামগুলিতে পুজো আসলেও বদলায় না তাঁদের জীবনযাত্রা। পুজোয় নতুন জামা-কাপড় তো দূরের কথা ওই ক'টা দিনও সংসার চালাতে দারিদ্রতার সঙ্গে যুজতে হয়। ওই দিনগুলিতেও নদীর খাড়িতে মাছ-কাকড়া ধরতে জঙ্গলে যান। সুন্দরবনের দেউলবাড়ী দেবীপুরে প্রায় একশোরও বেশি পরিবার আছে যাঁদের পরিবারে প্রধান সদস্যরা মাছ কাঁকড়া ধরতে গিয়ে জঙ্গলে প্রাণ হারিয়েছে। আবার কারওর বাঘে হয়তো পা কেটে নিয়ে চলে গেছে,কারুর হাত নেই কেউ বেচেঁ আছেন বিকলাঙ্গ হয়ে। তাই এই দুর্গা পুজোয় সেই সব পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে উদ্যোগ নিল পুলিশ।
কুলতলী থানাতে ওসি অর্ধেন্দু শেখর দে সরকার দীর্ঘদিন ধরেই সুন্দরবন লাগবে এলাকায় কর্মরত। তিনিই উদ্যোগী হয়ে লঞ্চে কয়েক ঘণ্টার পথ পেরিয়ে দেবীপুরে যান। গ্রামের প্রায় ৪০০ জন মানুষদের হাতে নতুন জামা-কাপড় তুলে দেন। পুলিশের কাছ থেকে পুজোয় নতুন শাড়িতে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি ওই দুঃস্থ পরিবারগুলি।