যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর (Swapnadip Kundu Death) রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে সৌরভ চৌধুরীকে । জানা গিয়েছে, পুলিশের কাছে যে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন স্বপ্নদীপের বাবা, সেখানে নাম রয়েছে সৌরভের (Sourav Chowdhury) । স্বপ্নদীপের বাবার অভিযোগ, সৌরভ চৌধুরীর নেতৃত্বেই হস্টেলের ছেলেরা অত্যাচার করে উপর থেকে ধাক্কা মেরে নীচে ফেলে মেরে ফেলে দিয়েছে স্বপ্ননীলকে । কিন্তু, সৌরভ চৌধুরী আসলে কে ?
বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণায়। জানা গিয়েছে, প্রাক্তন ছাত্র হয়েও হস্টেলের মেস কমিটিতে ছিলেন সৌরভ। বলতে গেলে, কমিটির অন্যতম মাথা তিনি । এখন যাদপুরের ছাত্র না হলেও, তিনি ওই হস্টেলেই থাকতেন । সেখানে থেকেই চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে জানা গিয়েছে । WBCS অফিসার হওয়ার স্বপ্ন তাঁর চোখে । কৃষক পরিবারের একমাত্র ছেলে । ছোট থেকেই সৌরভ মেধাবী । তাঁকে নিয়ে বাবা-মা-র চোখে অনেক স্বপ্ন । তাঁদের অভিযোগে, সৌরভকে ফাঁসানো হয়েছে ।
আরও পড়ুন, Jadavpur Student Death: যাদবপুরে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় আটক ১ প্রাক্তনী, নাম রয়েছে FIR-এ
ছেলের উপর শারীরিক অত্যাচারে করার অভিযোগ করেছিলেন স্বপ্নদীপের বাবা রামপ্রসাদ কুণ্ডু। সেই মতো থানায় অভিযোগও দায়েরও করেন তিনি। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরীকে আটক করেছে পুলিশ। তারপর দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয় ।
স্বপ্নদীপের বাবা অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন, সৌরভের সঙ্গে স্বপ্নদীপের আলাপ হয় চায়ের দোকানে । তখনও তিনি হোস্টেলে জায়গা পাননি । হস্টেলে সুযোগ না পেলে গেস্ট হিসেবে থাকতে পারে বলে স্বপ্নদীপকে জানান সৌরভ । এজন্য ১০০০ টাকা দিতে হবে । মাস দুয়েক পর স্বপ্নদীপ আবাসিক হয়ে যাবে বলে আশ্বাসও দেওয়া হয় । এরপরই হস্টেলে মনোতোষ নামে এক আবাসিকের রুমে থাকতে শুরু করে স্বপ্নদীপ।
রামপ্রসাদের দাবি, হোস্টেলে থাকার পর থেকেই ট্রমার মধ্যে চলে যাচ্ছিল স্বপ্নদীপ । এমনকী মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগেও মা-কে ফোন করে তাঁকে হোস্টেল থেকে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে স্বপ্নদীপ । জানান, তাঁর অনেক কথা বলার আছে । কিন্তু সেকথা আর বলা হয় না । স্বপ্নদীপের বাবার দাবি, "আমার ছেলেকে ওরা মারাত্মক র্যাগিং করেছে। প্রচণ্ড অত্যাচার করেছে। সেটা যাতে জানাজানি না হয়, তার জন্যই ওকে খুন করা হয়েছে।" বড় ছেলেকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা । ছেলের নাম ধরে চিৎকার করে উঠছেন । স্বামীকে সামনে পেলে জানতে চাইছেন, "আমার গোপাল ফিরবে তো আমার কোলে?"