ফের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শিক্ষিকার ঘন ঘন বদলির ঘটনায় এই তদন্তের নির্দেশ দিলেন তিনি। শিলিগুড়ির চম্পাসারির শ্রীগুরু বিদ্যামন্দির হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শান্তা মণ্ডলের বিরুদ্ধে এই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়িতে (Jalpaiguri) হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চে মামলার সওয়াল-জবাব চলাকালীন তিনি ওই শিক্ষিকাকে ‘বড়ই প্রভাবশালী’ বলে মন্তব্য করেন। শুধু তাই নয়, বিচারপতি তাঁকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও তুলনা করেন। অর্পিতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষিকার কোনও যোগাযোগ রয়েছে কিনা তাও জানতে চান বিচারপতি।
সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ ওই শিক্ষিকাকে পুরনো স্কুলে যোগ দিতে হবে আগামিকাল, শুক্রবার থেকেই। শান্তা যদি আদালতের এই নির্দেশ অমান্য করেন, তাহলে তাঁর এই পদক্ষেপ 'ব্রেক অফ সার্ভিস' বলে গণ্য করা হবে ৷ আদালতের এই রায়ে খুশি মামলাকারী ৷
২০১৬ সালে ওই শিক্ষিকা শিলিগুড়ি শ্রীগুরু বিদ্যালয়ের সহ শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন। এরপর ২০১৯ সালে তিনি প্রধান শিক্ষিকার পদের জন্য আবেদন করেন ও পরীক্ষা দেন। এরপর বীরপাড়া গার্লস স্কুলে তাঁকে যোগ দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়। সেখানে যোগ দেন শান্তা মণ্ডল। এর ঠিক এক বছরের মধ্যে শিলিগুড়ির অমিয় পাল চৌধুরী স্কুলে আবারও যোগ দেওয়ার সুপারিশ পান তিনি। তবে সেখানে যোগ দেননি শিক্ষিকা।
অভিযোগ, এরপর বদলির জন্য আবার আবেদন করেন তিনি। সুযোগও পেয়ে যান। সুপারিশ অনুযায়ী, নিজের পুরনো স্কুল অর্থাৎ শ্রীগুরু বিদ্যামন্দিরে যোগ দেন তিনি। ওই স্কুলের শিক্ষকের অভিযোগ, প্রথমে উৎসশ্রী (শিক্ষক বদলির পোর্টাল)-তে সহ শিক্ষিকা হিসেবেই নাম ছিল শান্তা মণ্ডলের। দিন কয়েকের মধ্যে তা বদলে প্রধান শিক্ষিকা করা হয়। এরপর ওই স্কুলের শিক্ষক প্রসুন সুন্দর তরফদার কলকাতা হাইকোর্টে শিক্ষিকার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন, অর্থাৎ স্কুলে যোগ দিতে পারেননি শান্তা মণ্ডল।
প্রসঙ্গত রাজ্য সরকারের উৎসশ্রী পোর্টালের মাধ্যমে বদলের জন্য আবেদন করতে হয় শিক্ষকদের। পাশাপাশি বদলের জন্য সুপারিশ করতে হয় শিক্ষা দফতরকে। ৫ বছরের মধ্যে একজন শিক্ষিকা কীভাবে সুপারিশ পাচ্ছেন, সেটাই হয়ে ওঠে মামলার ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়। কারণ, কলকাতা হাইকোর্টে শিক্ষকদের বদলি সংক্রান্ত একাধিক মামলা আগে হয়েছে। যেখানে শারীরিক অসুস্থতা থাকলেও বদলির নিয়মের ক্ষেত্রে সময়সীমা না অতিক্রান্ত হওয়ায় অনেক শিক্ষককেই দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে স্কুলে যেতে হয়। যা নিয়ে শুনানি রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আগে বলেছিলেন 'গোলি মারো রুল কো'।