সোমবার রাজভবন অভিযানের ডাক দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা । আর জি করের ঘটনায় সিবিআই তদন্তে অনাস্থা প্রকাশ করে বিশেষ কর্মসূচির ঘোষণা করেছেন তাঁরা । এদিন দুপুরে রাজভবন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে । রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে জুনিয়র ডাক্তার দেবাশিস হালদার জানিয়েছেন, সিবিআইয়ের চার্জশিট নিয়ে তাঁরা হতাশ । কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি । তারপরই জানান, রাজ্যপালের কাছে সিবিআইয়ের প্রতি ‘অনাস্থা’-র কথা জানাতে চান। তাই রাজভবন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে । এছাড়া আরও কয়েকটি কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়েছে ।
মঙ্গলবার দুর্গাপুজোর কার্নিভাল রয়েছে । আবার ওইদিন দ্রোহের কার্নিভাল রয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের । মানুষ যাতে সমস্যায় না পড়ে, হাইকোর্টের বিশেষ একটি নির্দেশের কথা মনে করিয়ে দিয়ে দ্রোহের কার্নিভাল প্রত্যাহারের আর্জি জানিয়ে ডাক্তারদের ইমেল করেছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ । এবার ওই দিন মানববন্ধন গড়ে তোলার ডাক দেওয়া হয়েছে । সেই বিষয়ে দেবাশিস হালদার বলেন,"মঙ্গলবার নাকি কার্নিভাল হবে। হাই কোর্টের রায়কে মান্যতা দিয়েই বলছি, আমাদের বিচারহীনতার ৬৫ দিন হয়েছে। আমাদের সহযোদ্ধারা এক দানাও না খেয়ে এখানে রয়েছেন। সেখানে কার্নিভালে মেতে উঠব সেই মানসিক অবস্থা নেই। বিঘ্নিতও করব না। পুলিশকে সুযোগ দিতে চাই না। কোনও প্ররোচনায় পা দেব না। যে দিন কার্নিভাল রয়েছে, সেদিন প্রত্যেক রাস্তার ধারে মানববন্ধন গড়ে তুলব। যাতে গাড়ি না আটকায়, বিশৃঙ্খলা না হয়, তা করব। জেলাতেও কার্নিভালের দিন পদযাত্রা, সভা, সমাবেশ করুন।" দ্রোহের কার্নিভালে অংশ তাঁরা নেবেন কি না, তা পরে আলোচনা করেই ঠিক করা হবে বলে জানিয়েছেন দেবাশিস ।
মুখ্যমন্ত্রী উদ্দেশেও বেশ কিছু প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন দেবাশিস হালদার । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, "এত সব কিছুর পরও কেন চুপ করে আছেন আপনি ? মুখ্যমন্ত্রী চাইলে ৫ মিনিটেই আমাদের দাবি পূরণ করতে পারেন । ভাবতে কষ্ট হচ্ছে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এতটা অমানবিক হতে পারেন, সরকার এতটা অমানবিক হতে পারে যে, এত দিন হয়ে গেল, মুখ্যমন্ত্রীর মুখ থেকে কোনও কথা শুনতে পাচ্ছি না। আমরা পাচ্ছি মুখ্যসচিবের থেকে একটা মেল, কোন একটা কুণাল ঘোষ, কোনও ছুটকো ছাটকার বিরূপ প্রতিক্রিয়া।"
ধর্মতলায় আন্দোলনকারীদের অনশন ১০ দিনে পড়ল । দশ দফা দাবিতে গত ৫ অক্টোবর থেকে আমরণ অনশনে বসেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা । প্রথম দিন থেকে অনশন করছেন তনয়া পাঁজা, স্নিগ্ধা হাজরা, সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, অর্ণব মুখোপাধ্যায় এবং পুলস্ত্য আচার্য। পরে অনশনে একে একে যোগ দেন অনিকেত, পরিচয় পাণ্ডা বং আলোলিকা ঘড়ুই,আলোক বর্মারা । কিন্তু, একের পর এক অনশনকারী অসুস্থ হয়ে পড়ছেন । এখনও পর্যন্ত চারজনকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে । কিন্তু, মনোবল অটুট বাকি অনশনকারীদের । তাঁরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের দাবি না পূরণ হয়া পর্যন্ত অনশন চলবে ।
সোমবার সব মেডিক্যাল সংগঠনকে বৈঠকে আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ । রবিবারই একটি ইমেল পাঠানো হয়েছে । সেখানে জানানো হয়েছে, সোমবার সাড়ে ১২টায় বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে স্বাস্থ্যভবনে । সব সংগঠন যাতে ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকেন, তার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে । প্রত্যেক সংগঠন থেকে মোট দু'জন বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারবেন । কারা থাকবেন, তাঁদের নামও ইমেল করে জানাতে হবে । এই বৈঠকে অচলাবস্থার জট কাটে কি না সেটাই দেখার ।