অনিকেত মাহাতো, আলোক বর্মা, অনুষ্টুপের পর এবার পুলস্ত্য আচার্য । টানা ৯ দিন অনশনের অসুস্থ হয়ে পড়লেন আরও এক জুনিয়র চিকিৎসক । জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যা থেকেই তলপেটে যন্ত্রণা শুরু হয় তাঁর । বমি ভাবও ছিল । তারপরই গ্রিন করিডোর করে পুলস্ত্যকে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে, এনআরএস-এ নিয়ে যাওয়া হয় । সিসিইউতে ভর্তি করানো হয়েছে পুলস্ত্যকে । তাঁর চিকিৎসার জন্য এনআরএসে পাঁচ সদস্যের একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে । চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পুলস্ত্যর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও এখনও সংকটমুক্ত নন ।
জেনারেল মেডিসিন, চেস্ট, কার্ডিও, নেফ্রো এবং অ্যানাস্থেসিয়া বিভাগের বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছে জুনিয়র ডাক্তার পুলস্ত্যর । এনআরএস-এর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, টানা ১৯৬ ঘণ্টা অনশনের কারণে পেটে ব্যথা হয়েছে পুলস্ত্যর । দীর্ঘ সময় না খাওয়ার কারণে তাঁর শরীরে জলশূন্যতা রয়েছে । এছাড়া, সোডিয়াম, পটাশিয়াম এবং অ্যাসিড বেসের মাত্রারও পরিবর্তন হয়েছে । যার ফলে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন পুলস্ত্য । আপাতত স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে । এছাড়া, আরও কিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করা হবে বলে জানিয়েছেন এনআরএস-এর চিকিৎসকরা । উল্লেখ্য, ধর্মতলায় প্রথম দিন থেকে যে ৬ জন জুনিয়র ডাক্তার অনশন শুরু করেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন অ্যানাস্থেসিয়া বিভাগের পিজিটি প্রথম বর্ষের পড়ুয়া পুলস্ত্য ।
দশ দফা দাবিতে গত ৫ অক্টোবর থেকে আমরণ অনশনে বসেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা । প্রথম দিন থেকে অনশন করছেন তনয়া পাঁজা, স্নিগ্ধা হাজরা, সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, অর্ণব মুখোপাধ্যায় এবং পুলস্ত্য আচার্য। পরে অনশনে একে একে যোগ দেন অনিকেত, পরিচয় পাণ্ডা বং আলোলিকা ঘড়ুই । উত্তরবঙ্গে অনশনে বসেছিলেন আলোক বর্মা এবং শৌভিকও । কিন্তু, একের পর এক অনশনকারী অসুস্থ হয়ে পড়ছেন । কিন্তু, শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলেও মনোবল এখনও অটুট । তাই, অনশনের সিদ্ধান্তে অনড় আন্দোলনকারীরা ।
এই আবহে সোমবার সব মেডিক্যাল সংগঠনকে বৈঠকে আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ । রবিবারই একটি ইমেল পাঠানো হয়েছে । সেখানে জানানো হয়েছে, সোমবার সাড়ে ১২টায় বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে স্বাস্থ্যভবনে । সব সংগঠন যাতে ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকেন, তার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে । প্রত্যেক সংগঠন থেকে মোট দু'জন বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারবেন । কারা থাকবেন, তাঁদের নামও ইমেল করে জানাতে হবে ।
আগেও চিকিৎসক-সরকারের একাধিক বৈঠক হয়েছে । কিন্তু, নিটফল শূন্য । জট তো কাটেইনি, উল্টে অনশনের মতো বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা । তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে গণইস্তফা দিয়েছেন সিনিয়র চিকিৎসকরাও । তবে, সোমবারের ডাকা বৈঠক কি ফলপ্রসূ হবে? জট কি কাটবে ? সেদিকেই তাকিয়ে সব মহল ।