আগামী ২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার থেকে শান্তিনিকেতনে শুরু হতে চলেছে ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা। ২০১৯ সালের পর ফের এই ঐতিহ্যবাহী মেলার আয়োজন করতে চলছে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। গত বছর, অর্থাৎ, ২০২৩ সালে রাজ্য সরকারকে পৌষমেলার আয়োজন করতে দিয়েছিল বিশ্বভারতী ও মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট। যা নিয়ে শুরু হয়েছিল বিতর্ক। এবারে সেই বিতর্কে দাঁড়ি পড়ছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহালমহল। শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের আয়োজনে এবার বীরভূমে পৌষমেলা হতে চলেছে। এই বছর এই মেলা ৩ দিনের বদলে চলবে ৬ দিন ধরে।
শান্তিনিকেতনের রুখুমাটি সারা বছর মুখিয়ে থাকে কবে পৌষমেলা আসবে, দেশ-বিদেশের মানুষের পায়ের ধুলো পড়বে তার গায়ে। ব্রহ্মডাঙা শান্তিনিকেতনে দুর্গোৎসব নেই। পৌষ উৎসবই এখানকার মানুষের প্রধান বার্ষিক পার্বণ, প্রাক্তনীদের পুনর্মিলন তিথি। ইন্ডাস্ট্রি-বিরল বীরভূমের স্থানীয় অর্থনীতিতেও পৌষমেলার গুরুত্ব অপরিসীম।
দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ১৮৮৮ সালের ৮ মার্চের 'ডিড'-এ শান্তিনিকেতনে একটি বাৎসরিক মেলা করার জন্য ট্রাস্টির সদস্যদের ‘চেষ্টা ও উদ্যোগ’ করতে বলেছিলেন। এই দলিল যখন রচিত হয় তখন বিশ্বভারতী দূরের কথা, শান্তিনিকেতন ব্রহ্মবিদ্যালয়ও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আজও কাগজে-কলমে এই মেলা পরিচালনার অধিকারী মহর্ষি-প্রবর্তিত সেই শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট।
গত নভেম্বর মাসেই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এই পৌষ মেলা নিয়ে কী সিদ্ধান্ত গ্রহণ নেওয়া হবে, তার অপেক্ষায় ছিলেন বীরভূম জেলার একাধিক ব্যবসায়ী।
গত চার বছর নানা কারণ দেখিয়ে পৌষমেলা করেনি বিশ্বভারতী। তার পরিবর্তে দু’বার হয়েছিল ‘বিকল্প পৌষমেলা’। গত বছর অবশ্য বিশ্বভারতীর পূর্বপল্লি মেলার মাঠে ফিরে আসে পৌষমেলা। তবে, মেলার আযোজক বিশ্বভারতী ছিল না। ছিল বীরভূম জেলা প্রশাসন। শর্তসাপেক্ষে জেলা প্রশাসনকে মেলা করার জন্য পূর্বপল্লির মাঠ দিয়েছিল বিশ্বভারতী। এই বছর ফের বিশ্বভারতী ও শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট মেলা করবে। পৌষমেলার পুরনো চেহারা ফিরবে বলে আশাবাদী উৎসাহীরা। স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও মনে করছেন, এর ফলে স্থানীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
চিরাচরিত সেই প্রথা অনুযায়ী পৌষ উৎসব ও পৌষমেলা চলে আসছে। প্রথমে পুরনো মেলার মাঠে হত এটি। কালের নিয়মে মেলার পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় পূর্বপল্লির মাঠে হয়ে আসছিল পৌষমেলা। তবে প্রায় ৫ বছর পর পুরনো ছন্দে ফিরছে পৌষ মেলা এই খবর জানতেই কার্যত খুশির হাওয়া পর্যটক থেকে শুরু করে সাধারণ ব্যবসায়ী এবং মানুষের মধ্যে।