বিজেপি-বিরোধী ঐক্যের স্বার্থে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে (President Election) তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী (যিনি কিছু দিন আগেও তৃণমূল নেতা ছিলেন) যশবন্ত সিনহাকে সমর্থন করা হয়েছে, কিন্তু রাজনীতির বৃহত্তর প্রেক্ষিতে তার কোনও প্রভাব পড়বে না। আপাতত এই ব্যাখ্যা দিচ্ছে সিপিএম নেতৃত্ব।
যশবন্ত সিনহা আগে বিজেপি কেন্দ্রীয় স্তরের নেতা ছিলেন। অটল বিহারী বাজপেয়ীর আমলে কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীও ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ার জেরে তিনি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। এবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তাঁকে বিরোধী জোটের প্রার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই প্রার্থীকে সমর্থন করেছে সিপিএম। কিন্তু বিষয়টি সিপিএমের বহু কর্মী ও সমর্থক ভালো ভাবে নেয়নি। রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস এখন সিপিএমের প্রধান প্রতিপক্ষ। সিপিএমের রাজ্য নেতারা একাধিকবার তা বলেছেন। তারপরেও তৃণমূলের এমন একজন প্রার্থীকে দল সমর্থন করেছে যার আবার বিজেপি ঘেষা রাজনৈতিক অতীত রয়েছে। স্বভাবতই বিষয়টি নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে দল। শেষ পর্যন্ত কেন যশবন্ত সিনহাকে দল সমর্থন করল সেই ব্যাখ্যা দিয়েছে দল।
India COVID Update:করোনার সংক্রমণ ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী, দেশে দৈনিক আক্রান্ত ১৭ হাজার পার
দলীয় নেতৃত্বের বক্তব্য, অতীতেও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিপক্ষ দলের কোনও প্রার্থীকে সমর্থন করার পরেও সিপিএম সেই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ভোটে লড়াই করেছে। সেই ধারা মেনেই বাংলায় বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ সব মানুষের সমর্থন একজোট করার চেষ্টা চালিয়ে যাবে সিপিএম, এমনটাই সিদ্ধান্ত হয়েছে গত রাজ্য সম্মেলন ও পার্টি কংগ্রেসে।
সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপি-বিরোধী দলগুলির সমঝোতার ভিত্তিতে এক জন অভিন্ন প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে সমবেত করার লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। শরদ পওয়ার, ফারুখ আবদুল্লা ও গোপালকৃষ্ণ গান্ধী রাজি না হওয়ায় যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তাতে যশবন্তকে সমর্থন করতেই বিরোধী শক্তি সম্মত হয়েছে এবং তাতে সিপিএমও শামিল হয়েছে। এই প্রসঙ্গে ইয়েচুরি মনে করিয়ে দিয়েছেন, অতীতেও বিশেষ ক্ষেত্রে কংগ্রেস ছেড়ে আসা জগজীবন রাম বা ভি পি সিংহকে বামেরা সমর্থন করেছে।
যশবন্ত সিনহাকে সমর্থনের সিদ্ধান্তকে অবশ্য স্বাগত জানিয়েছে বাম দল পিডিএস। দলের নেতা সমীর পূততুণ্ড বলেন, ‘‘কংগ্রেস এবং বামেরা ধৈর্য ধরে এই পথে এগোতে পারলে বিজেপিকে আরও বেশি বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া সম্ভব।’’