হিসাব বলছে গত কয়েকদিনে ডিভিসি থেকে জল ছাড়া হয়েছে চার লক্ষ কিউসেকের বেশি। যার জেরে হাওড়া, হুগলি, পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ দক্ষিণবঙ্গে ১০ জেলায় হুহু করে ঢুকছে নদীর জল। ফি বছর পুজোর আগে এই পরিস্থিতির জন্য সরাসরি ডিভিসিকে দায়ী করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। পশ্চিম মেদিনীপুর এবং হাওড়ার একাংশের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পর কেন্দ্রীয় এই সংস্থার সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক রাখা সম্ভব নয় বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যের ১০ জেলায় বানভাসি কয়েক লক্ষ মানুষ। বুধবার থেকেই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে জেলায় ঘুরছেন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতায় ফেরার আগে এদিন পাশকুড়া ও উদয়নারায়ণপুরের রাস্তায় জল যন্ত্রণা ঘুরে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজেই জানালেন কোটালের জেরে জল উঠছে কালীঘাটেও। জেলা সফরের মধ্যেই তাঁকে একথা জানিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই বছর যেন বেশি করে জল ছাড়া হয়েছে। আর তাতেই ডুবেছে বাংলা।
আরজি করের ঘটনায় টানা ৪১ দিন আন্দোলন করছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। জট কাটাতে বুধবার তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু এই বৈঠকের মিনিটস খুশি করতে পারেননি তাঁদের। রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে এদিন জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, জুনিয়র ডাক্তারদের সব দাবি মেনে নিয়েছে রাজ্য। এবার বন্যার কথা মাথায় রেখে তাঁদের কাজে ফেরা উচিত।
তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই জেলা সফরের মধ্যে বেশ কিছু এলাকায় ত্রাণ নিয়ে অভিযোগ উঠছে। হুগলি পুরশুরা-সহ বিস্তৃর্ণ এলাকায় সাধারণ মানুষের ক্ষোভ খাবার ও ত্রিপল বিলি নিয়ে। তাঁদের অভিযোগ, এই জলের মধ্যেও তাঁরা খাবার পাচ্ছেন না। আসছে না কোনও সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই লক্ষাধিক মানুষকে উচু জায়গায় নিয়ে আসা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই জলের জেরে যে কৃষি ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে, তার ক্ষতিপূরণ দেবে রাজ্য। তবে জেলা প্রশাসনের দাবি, পূর্ণিমার কোটালের জেরে শুক্রবারও জল বাড়তে পারে একাধিক জেলায়।