সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে । যা ফের প্রশ্ন তুলে দিয়েছে ডাক্তারদের নিরাপত্তা নিয়ে । শুক্রবার রাত থেকেই শুরু হয়েছে হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি । শুক্রবার রাতেই পশ্চিমবঙ্গ জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের প্রতিনিধি কিঞ্জল নন্দ, দেবাশিস হালদাররা সাগর দত্ত হাসপাতালে যান । সেখানকার জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেন । ঘটনার তীব্র নিন্দা করে তাঁরা জানান, তাঁরা হতাশ । আবারও একটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা । সাগরদত্তের ডাক্তাররা ইতিমধ্যেই কর্মবিরতি শুরু করেছেন । বাকি হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারদের পদক্ষেপ কী হবে, তা তাঁরা জিবি বৈঠকের পর জানাবেন ।
সাগর দত্তের জুনিয়র ডাক্তাররা কী বলছেন ?
হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'সরকার বা কলেজ অথোরিটি কেউই আমাদের সিরিয়াসলি নিচ্ছে না । তাই কর্মবিরতি ছাড়া অপশন নেই । আর জি করের ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলন চলা অবস্থাতেই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে আন্দোলন যখন উঠে যাবে তখন আমাদের নিরাপত্তা কতটা থাকবে । শুক্রবার রাত থেকেই কর্মবিরতি শুরু হয়েছে । নিরাপত্তার দাবিতেই কর্মবিরতি । আমরা চাই আর যেন কোনও অভয়ার ঘটনা না ঘটে । যতক্ষণ না পর্যন্ত কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেওয়া হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে ।'
কী বলছেন কিঞ্জল ?
শুক্রবার রাতেই কিঞ্জল পৌঁছন সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে । সেখানে গিয়ে বলেন, হাসপাতালে রাতে এক রোগীকে ভর্তি করানো হয়েছিল। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। হঠাৎ করে রোগীর আত্মীয়েরা হাসপাতালের চার তলায় উঠে যান। ২০ থেকে ২৫ জন ছিলেন তাঁরা। কী ভাবে উঠে গেলেন, কেন নিরাপত্তা ছিল না, সেটা দেখতে হবে। উপরে গিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের উপর তাঁরা অত্যাচার করেন। ডাক্তারদের মধ্যে মহিলা, পুরুষ উভয়েই ছিলেন। হাসপাতালে ভাঙচুর করা হয়। এখনও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেই। আমরা পশ্চিমবঙ্গ জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের তরফে আমরা এখানে এসেছি। আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলেছি। যা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।'
কিঞ্জল আরও বলেন,'...যতই মৌখিক ভাবে আমাদের আশ্বাস দেওয়া হোক, প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজে নিরাপত্তার জায়গায় বড় ফাঁক থেকে যাচ্ছে। সাগর দত্তের ঘটনাই তার প্রমাণ। আপাতত সাগরদত্তের জুনিয়র ডাক্তারেরা কর্মবিরতি ঘোষণা করেছেন। আমরা আলোচনা করে আমাদের সিদ্ধান্ত জানাব।'
সাগর দত্তের ঘটনা
শুক্রবার রাতে রোগী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে। অভিযোগ, রোগী মৃত্যুর কারণে রোগীর পরিবার চিকিৎসকদের উপর হামলা করে । চলে ধাক্কাধাক্কি। সেই সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে আহত হয়েছেন একজন পুলিশ কর্মী এবং দু'জন স্বাস্থ্যকর্মী । রোগীর পরিজনদের অভিযোগ, এদিন শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কোনও রকম চিকিৎসা হয়নি। দীর্ঘক্ষণ সেখানে বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখা হয়।
আক্রান্ত হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মীদের অভিযোগ, রোগী মৃত্যুর পরেই রোগীর পরিজনেরা চিকিৎসকদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন, চিকিৎসকদের ধাক্কাধাক্কি করা হয়। তাঁরা এগিয়ে গেলে আহত হন।