সময় বদলে গিয়েছে অনেক৷ কিন্তু জঙ্গলমহলের জনপদ গোপীবল্লভপুরে আজও অটুট রয়েছে ঐতিহ্যবাহী পাখির লড়াইয়ের উন্মাদনা৷
উনবিংশ শতকের কলকাতা মাতোয়ারা থাকত পাখির লড়াই নিয়ে। ছাতুবাবুর মাঠ বা দয়াল মিত্তিরের বাগানবাড়িতে বসত আসর৷ ভিড় লেগে যেত জুড়িগাড়ির। সেই বাবুয়ানি কালের অতলে তলিয়ে গিয়েছে। কিন্তু গোপীবল্লভপুরে পৌষ সংক্রান্তির দুপুরের মিঠে রোদ গায়ে মেখে এখনও হয় পাখির লড়াই।
উড়িষ্যা রাজ্যের শাসনাধীনে থাকার সময় শুরু হওয়া এই ট্র্যাডিশন এখনও চলছে৷ গোস্বামীদের রাধাগোবিন্দ মন্দিরের কাছে টাঙানো হয় চাদোয়া। হাউসিদের হাতে ধরা পাকা কলার টুকরো দেখিয়ে রাগিয়ে দেওয়া হয় পাখিদের। লড়াই করার দম যাতে না কমে, সে জন্য দেওয়া হয় আখের রস। একের পর এক পাখি এগিয়ে যায় লড়াইয়ের মঞ্চে। এই বছর লড়েছে শতাধিক পাখি৷ পরাজিত বুলবুলদের ঝুঁটি কেটে ছেড়ে দেন সেনাপতি৷ যাঁরা পাখির লড়াই পরিচালনা করেন, তাঁদেরই বলা হয় সেনাপতি।
গোপীবল্লভপুরের দু'টি পাড়া বাজারসাই এবং দক্ষিণসাইয়ের মধ্যে হয় এই পাখির লড়াই৷ বুলবুলের ঝুঁটি কাটার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে মান-মর্যাদার ব্যাপার। সব মিলিয়ে একটুকরো উনিশ শতক এখনও বেঁচে আছে গোপীবল্লভপুরে।