বাংলা সাহিত্যে সমরেশ মজুমদারের অবদান অবিস্মরণীয়। সদ্য প্রয়াত সাহিত্যিকের অধিকাংশ উপন্যাসই বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। একনজরে দেখে নেওয়া যাক সমরেশ মজুমদারের সেরা ৫টি উপন্যাস।
১) উত্তরাধিকার : অনেকের মতে সমরেশের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস। স্বর্গছেঁড়া চা বাগান থেকে জলপাইগুড়ি শহরে চলে আসে শিশু অনিমেষ৷ তার বেড়ে ওঠা যেন ভারতের স্বাধীনতার সমান্তরাল চলন। স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণার বুকে গুঁড়ি মেরে হাঁটতে থাকা নতুন ভারতের স্বপ্ন, একটি কিশোর বড় হয়ে ওঠা, ক্রমশ নিজেকে চেনা- শরীরে ও মনে। অবশেষে উত্তাল কলকাতায় পদার্পণ। মহানগর তাকে স্বাগত জানায় গুলির স্পর্শে।
২) কালবেলা : সমরেশ মজুমদারের সর্বাধিক জনপ্রিয় উপন্যাস কালবেলা। উত্তরবঙ্গের ছেলে অনিমেষ পড়তে আসে কলকাতায়। মহানগরীর রাস্তায় তখন উত্তাল সত্তরের লাভাস্রোত। অনিমেষ সেই স্রোতে ভাসায় জীবনের নৌকা। অনিশ্চিত জীবনে তার নোঙর হয় মাধবীলতা। এক আশ্চর্য প্রেমের গল্পের শেষে বিপ্লবের সূর্যের মতোই জন্ম হয় অর্কর। অনিমেষ মাধবীলতার সন্তান।
৩) কালপুরুষ : সত্তরের স্বপ্নের টুকরো টুকরো হওয়া শরীর থেকে জন্ম নিচ্ছে আটের দশকের কৈশোর৷ অনিমেষের ছেলে অর্ক চিনছে এই আজব কলকাতাকে। বিপ্লবের লাল আগুন ততদিনে মৃত, সংসদীয় বামপন্থার আনাচে কানাচে বহু সমীকরণ। একটি বদলে যাওয়া সমাজের দিকে অস্বস্তি নিয়ে তাকিয়ে থাকে বিগতযৌবন অনিমেষ, ক্লান্ত মাধবীলতা আর রুক্ষ-অভিমানী অর্ক
৪) গর্ভধারিণী : সমরেশের আরেকটি অসাধারণ উপন্যাস। কলকাতার কয়েকজন কলেজপড়ুয়ার গল্প। অতিবামপন্থী রাজনীতির স্থবিরতা পেরিয়ে নতুন কিছু করতে চাওয়া সৎ আবেগ তাদের শহরছাড়া করে। অবশেষে তারা পৌঁছে যায় প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রামে। সভ্যতার আলো যেখান পৌঁছোয়নি। সেখানেই নতুন করে জীবনের অর্থ খুঁজে পায় তারা। যে জীবন নাগরিক আবিলতার বাইরে
৫) সাতকাহন : এই উপন্যাস একটি একা মেয়ে লড়াই। দীপা নামে মেয়েটিকে বার বার পর্দার আড়ালে রাখতে চায় সমাজ, চায় পিতৃতান্ত্রিক চাদরে ঢেকে রাখতে। কিন্তু পারে না। উপন্যাস দেখে এক শান্ত অথচ দৃঢ় আগুনপাখির আশ্চর্য উড়াল। তার নামই দীপা।