৭৭৫ দিন পর তিহাড় থেকে নিজভূমে ফিরেছেন অনুব্রত মন্ডল। নীচু পট্টির বাড়িতে ফিরে বাছাবাছা নেতাদের সময় দিয়েছেন কেষ্ট। কাউকে ঘরে ডেকেছেন, কাউকে আবার ফিরতে হয়েছে দরজা থেকেই। অনুব্রত ফিরে আসার পর বীরভূমের রাজনীতিতে নয়া সমীকরণের জন্ম হচ্ছে, বলেও মত রাজ্যের শাসক দলেরই একাংশের।
অনুব্রতের সঙ্গে যাঁরা দেখা করতে পেরেছেন, সেই তালিকায় উল্লেখযোগ্য নাম নলহাটির তৃণমূল বিধায়ক রাজেন্দ্রপ্রসাদ সিংহ, বোলপুর পুরসভার চেয়ারপার্সন পর্ণা ঘোষ এবং তাঁর স্বামী সুদীপ্ত ঘোষ। অনুব্রতর দরজা থেকে ফিরতে হল কাদের? মঙ্গলবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় যাওয়ার আগেই অনুব্রতর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ এবং সিউড়ির তৃণমূল বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী। তৃণমূলের অনেকেরই দাবি, চন্দ্রনাথকে ভিতরে ঢুকতে দেননি কেষ্ট। তবে চন্দ্রনাথের দাবি, তিনি অনুব্রতের সঙ্গে দেখা করেছেন। তৃণমূল সাংসদ অসিত মাল, ময়ুরেশ্বরের বিধায়ক অভিজিৎ রায়, পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী, মুরারইয়ের বিধায়ক মোশারফ হোসেনদের ফিরতে হয়েছে অনুব্রতর বাড়ি থেকে।
কেন দলের একাংশকে প্রবেশাধিকার দিলেন অনুব্রত? ওয়াকিবহাল মহলের দাবি তিহাড়ে থাকাকালীন যাঁরা অনুব্রতর ‘পাশে’ ছিলেন, তাঁরাই মঙ্গলবার তাঁর নীচু পট্টির বাড়িতে প্রবেশাধিকার পেয়েছেন।
অনুব্রতর অবর্তমানে বীরভূমের রাজনৈতিক ‘সমীকরণ’ যে অনেকটা বদলেছে, অস্বীকার করার জায়গাই নেই। বরাবর ‘অনুব্রত-বিরোধী’ হিসাবে পরিচিত নেতারাদের কেউ কেউ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে খবর।
গরু পাচার মামলায় জামিন পেয়ে দেড় বছর পর বাড়ি ফিরে পোস্তর বড়া, মাছ দিয়ে ভাত খেয়েছেন অনুব্রত। শরীরজুড়ে ক্লান্তি রয়েছে, প্রথম দিনের অনেকটা সময়ে টানা ঘুমিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছে আছে, জানিয়েছিলেন, কিন্তু বীরভূমের বৈঠকে এসেও অনুব্রতর প্রসঙ্গ না টেনেই কলকাতা ফিরে এসেছেন মমতা। এই পরিস্থিতিতে কেষ্টর ফিরে আসা কি ক্রমশ বদলে দেবে তৃণমূলের নানা হিসেব নিকেশ? সেই নিয়েই জল্পনা বাড়ছে শাসক দলের অন্দরে।